শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
গণতন্ত্র আমাদের হাতের নাগালে নাই-লালমনিরহাটে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় লালমনিরহাটে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ও ঔষধ সেবা অর্ধেক মূল্যে হত দরিদ্রদের ছানি অপারেশন অরবিট চক্ষু হাসপাতালে লালমনিরহাটে শীতের হরেক রকমের পিঠার দোকানের পসরা নিয়ে বসছেন বিক্রেতারা বিএনপির কর্মী সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত বাবা-মাকে একটা বাড়ি করে দেওয়ার স্বপ্ন যেন চিরতরে হারিয়ে গেলো লালমনিরহাটের শহীদ শাহিনুর আলমের বিএনপির কর্মী সভা অনুষ্ঠিত যতদিন নির্বাচন হবে না, ততদিন স্বাভাবিক অবস্থায় দেশে ফিরে আসবেনা-অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু আলু চাষ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন লালমনিরহাটের কৃষকেরা লালমনিরহাটে সরকার ফার্মেসী এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি (জিআর) চাল কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ
এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলীর মাসে ৫শত ৬০লিটার জ্বালানি খরচ!

এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলীর মাসে ৫শত ৬০লিটার জ্বালানি খরচ!

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) লালমনিরহাটের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নাফের সরকারী গাড়ী বিলাস বহুল জীবন যাপন নিয়ে নানান গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। তিনি শুধু গাড়ি ব্যবহারই করেননি, চালক, জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ হিসেবে গাড়ি প্রতি শুধু মাসে এলজিইডি থেকে দিতে হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা। তাছাড়াও তার অনিয়ম, দুর্নীতি আর নামে-বেনামে সম্পত্তিসহ কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া অভিযোগ উঠেছে।

 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারী মাসে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন লালমনিরহাটে যোগদান করেন সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নাফ। তিনি উক্ত অফিসে যোগদানের পর তার অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে খারাপ আচরণসহ বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েন। এমনকি এলজিইডি লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুর কাদের ইসলামসহ কাউকে মানেন না। তার কাছে সবাই যেন একেবারে অসহায়। ঠিক-ঠাক অফিস করেন না। তিনি তার ইচ্ছা মতো চলাফেরা করেন। স্থানী সরকার মন্ত্রণালয় হিসেবে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দেখভাল ও নজরদারির জন্য এলজিইডির গাড়ি জেলা ভিতরে ব্যবহারের যৌক্তিকতা আছে বলে কেউ কেউ মনে করেন। কিন্তু সে গাড়ি ব্যবহারে নির্বাহী প্রকৌশলীর অনুমতিক্রমে সহকারী প্রকৌশলীরা জেলার ভিতরে ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়া সরকারি ভাবে সহকারী প্রকৌশলীদের নামে কোন গাড়ি বরাদ্দ নেই। অথচ সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নাফ এলজিইডির দুই দুটো গাড়ি বীরদর্পে ব্যবহার করছেন। ওই সব গাড়ির চাবি চালক ও মেকানিক্যাল ফোরম্যানের নিকট জমা রাখার বিধান থাকলেও তিনি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নিজের কাছে রাখেন। আব্দুল মান্নাফ চালকসহ সার্বক্ষণিক এলজিইডির গাড়ি ব্যক্তিগত কাজেও ব্যবহার করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন যেমন আছে, তেমনি এর জবাব সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অজানা নয়।

 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানান, সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নাফ ঢাকা মেট্রো-হ-১১-৭৬১৪ নম্বর সরকারী গাড়িটি ও তার চালক আলম হোসেনকে নিয়ে লালমনিরহাট থেকে পঞ্চগড়ে প্রতিমাসেই পরিবারকে নিয়ে ১শত ৩৯কিলোমিটার সড়ক পথ পাড়ি দিয়ে গ্রামের বাড়িতে যান। আবার সেই সরকারী গাড়িতে চড়ে গ্রামের বাড়ি থেকে কর্মস্থলে ফিরেন। এভাবেই চলতি বছরের শুধুমাত্র জুলাই মাসে ৫শত ৬০লিটার গাড়ির জ্বালানি, চালক, মেরামতসহ বিভিন্ন খাতে প্রতি মাসে প্রায় এক লাখ টাকা খরচ করে অধিদপ্তরের। অথচ ওই গাড়িতে ৫শত ৬০লিটার জ্বালানি তেল দিয়ে প্রায় ৪হাজার ৪শত কিলোমিটা চলাচল করা সম্ভব। যা গাড়িতে রাখা লকবইটি জব্দ করলে প্রমান মিলবে। তাছাড়াও ওই গাড়ীতে চড়ে মাসে মাসে পরিবারসহ রংপুরে শপিং করা, মেয়ের স্কুল যাতায়াত, ব্যক্তিগত কাজে জেলার বাহিরে সফর, রাতে শহরের বিভিন্ন স্থানে অহেতুক ঘোরাঘুরি করে সরকারি সম্পদ এভাবেই অপচয় করেই চলছেন। সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নাফের সরকারী গাড়ি বিলাসবহুল জীবন যাপনের আয়ের উৎস কি, এনিয়ে নানান গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে এলজিইডি অঙ্গনে। তবে তার ওই গুঞ্জনের পিছনে লুকিয়ে ছিল বড় ধারণের দুর্নীতি। সেই দুর্নীতির ফিরিস্তি ঘাঁটতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তিনি এলজিইডির বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প দেখভালের নামে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সহযোগিতা ও অনৈতিক সুবিধা নিয়ে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। আব্দুল মান্নাফ যে মোবাইল ব্যবহার করেন, যার একটির মুল্য ১লক্ষ ২৬হাজার টাকা, তার গায়ের পোষাক দামী, বাসায় দামী আসবাপত্র, স্ত্রী ও সন্তানদের চলাফেরা দেখলে মনে হয় তারা রাজা-বাদশার আমলীয় প্রতাপশালী। এতো বিলাসবহুল জীবন যাপনের অর্থ তার বেতনের টাকায় নয়, বড় অর্থের অংশটা আদায় করেন ঠিকাদারদের নিকট থেকে কাজের ভুল-ভাল ধরে। এভাবে অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে বাড়ি-গাড়ি, নামে-বেনামে সম্পত্তিসহ কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তিনি। যা তদন্ত করলে বেড়িয়ে আসবে আব্দুল মান্নাফ লালমনিরহাটে যোগদানের পর থেকে কি কি অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন।

 

নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক শর্তে ক’জন স্থানীয় এলজিইডির ঠিকাদার বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) লালমনিরহাটের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নাফের উন্নয়ন প্রকল্প তদারকিতে আমরা সন্তোষ্ট না। কারণ তার কাছে টাকাই সব। উপরের বড়কর্তার সাথে তার গভীর সক্ষতা রয়েছে। ফলে ক্ষমতার দাপটে উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শনে গেলে টাকা, কোন ফাইলে স্বাক্ষর নিতে গেলেও টাকা দিতে হয়। কাজ নিম্নমানের হলেও কোন সমস্যা নেই। আব্দুল মান্নাফকে টাকা দিলে সবেই ভাল বলে স্বাক্ষর করেন। এমনিতে নির্মাণ সামগ্রী দাম উর্দ্ধগতি তার উপর আব্দুল মান্নাফের অনিয়ম, দুর্নীতিতে আমরা অতিষ্ট হয়ে উঠেছি।

 

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মঞ্জুর কাদের ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি গাড়ী নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ায় বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ খবর নিচ্ছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone