লালমনিরহাট জেলার বুড়িমারী শুল্ক বন্দরে অনিয়ম এবং দূর্নীতিতে সম্পৃক্ত থাকার কারনে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ১৬জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে একযোগে অন্যত্র বদলির আদেশ দিয়েছেন। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় অধীনস্থ বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এই আদেশটি গত ২৫ আগষ্ট পরিপত্র আকারে জারি করেন।
বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ আগারগাঁও কার্যালয়ের পরিচালক (প্রশাসন বিভাগ) ডি এম আতিকুর রহমানের স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, বুড়িমারী স্থলবন্দরের সহকারি পরিচালক (ট্রাফিক) রুহুল আমিন, ট্রাফিক পরিদর্শক জাহিদুর রহমান, বন্দর হিসাব রক্ষক আদনান খালিদ বসুনিয়া, ক্যাশিয়ার ভ্রমর কুমার সরকারকে কুড়িগ্রাম জেলার সোনাহাট স্থলবন্দর, ট্রাফিক পরিদর্শক সালাউদ্দিন, ওয়্যার হাউস সুপারেন্টেড মানিকুর রহমানকে ফেনী জেলার বিলোনিয়া স্থলবন্দর, ট্রাফিক পরিদর্শক শাহিন মাহমুদ, আমিনুল হককে ময়মনসিংহ জেলার গোবরাকুড়া-কড়াইতলী স্থলবন্দর, সুপারেন্টেড আবুল বাশার, মিনহাজ, হারুন-উর রশিদ ও কম্পিউটার অপারেটর হাসমতউল্লাহকে যশোর জেলার বেনাপোল বন্দর, ওয়্যার হাউস সুপারেন্টেড মাসুদ রানা দিনাজপুর জেলার হিলি স্থলবন্দর, একই পদের ফিদা হাসান পঞ্চগড় জেলার বাংলাবান্ধায়, মাসুম বিল্লাহকে খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় স্থলবন্দর, কম্পিউটার অপারেটর সেলিম রেজাকে শেরপুর জেলার নকুগাঁও স্থলবন্দরে বদলির আদেশ দিয়ে ৩১ আগষ্টের মধ্যে যোগদান করতে বলা হয়।
একই দিনে অন্য একটি আদেশে উল্লেখিত বন্দর হতে ১১ কর্মকর্তা-কর্মচারী কে বুড়িমারি স্থল বন্দরে কাজে যোগ দিতে নির্দেশ দেওয়া আছে।
বুড়িমারী বন্দর হতে একযোগে ১৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী বদলি হবার নজির এবারই প্রথম, ফলে বুড়িমারী স্থলবন্দরে বদলির গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্যর সৃষ্ট হয় আমদানি রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
গনবদলির বিষয়টি স্বীকার করেন বুড়িমারী শুল্ক বন্দরের সহকারি পরিচালক (ট্রাফিক) রুহুল আমিন, তিনি বলেন অনিয়ম কিংবা অভিযোগের কারনে নয় এটি স্বাভাবিক বদলি পক্রিয়া।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের সিএন্ডএফ ব্যাবসায়ী আফজাল হোসেন, বন্দরের ব্যাবসায়ী মহব্বত আলী জানান, স্থল বন্দরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের নাম ব্যাবহার করে দুদকে অভিযোগ করার কারনে এই গন বদলির আদেশ। অভিযোগে বলা হয় ভারতীয় পন্য বাহী ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়, ওয়্যার হাউসে রাত্রী কালীন অবস্থানের জন্য আদায় কৃত অর্থ জমা না করে আত্মসাৎ, ট্রাক ওজন ষ্টেশনে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, অর্থের বিনিময়ে সঠিক পরিমাপ না করা, ভুয়া চালান জমা দিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া, ভুয়া বিল ভাউচার জমা করা, ছুটি নিয়ে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে না আসা, বন্দরের গোপনীয়তা প্রকাশ করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করা হয়। দুদকে এই ১৬ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। দুদক ছায়া তদন্ত করে এবং অভিযোগের কপি স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বরাবরে পাঠায়। স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ গত ১৪ আগষ্ট অভিযোগ হাতে পেয়ে উল্লেখিত কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে এই বদলির আদেশ দেন।
এদিকে ২৯ আগষ্ট রাতে শুল্কছাড় সুবিধায় ০৩ ট্রাক চাল বুড়িমারী স্থলবন্দরে প্রবেশ করে, অভিযোগ রয়েছে আমদানিকৃত তিনট্রাক চাল ভাতের চালের কথা বলা হলেও এগুলো ছিল বাসমতি চাল।
বুড়িমারি সিএন্ডএফ এজেন্ট মিঠুকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এটা সাধারন চাউল তবে দেখতে বাসমতির মতো লম্বা।এটি নিয়ে দুদিন আগে কাষ্টম কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হলে তারা চালের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। সাধারন চালের আড়ালে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাসমতি চাল আনছেন কৌশলে, বাসমতির সুগন্ধ না থাকায় তারা সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছেন বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যাবসায়ী এই প্রতিবেদক কে জানান।