আলোর মনিতে কালীগঞ্জের মাদকের প্রতিবেদন করায় কিছুটা নড়ে চড়ে বসেছে পুলিশ বাহিনী। তাই সু-কৌশলে লালমনিরহাট গোয়েন্দা পুলিশ মাদকসহ একটি প্রাইভেট কার আটক করে। প্রাইভেট কারটি আটক হবার পর থেকেই জেলা জুড়ে টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। অনেকে এপিএস মিজানকে দোষারোপ করছে।
গত ২৬ জুলাই লালমনিরহাটের সদরের (লালমনিরহাট সরকারি কলেজ) সংলগ্ন তালুক খুটামারা এলাকার বাবুলের চায়ের দোকানের সামনে একটি প্রাইভেট কারের ভিতর থেকে একশত বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় প্রাইভেট কারের চালক মিজানুর রহমান (৩০) কে আটক করা হয়।
জানা যায়, ঢাকা মেট্রো খ ১৩-০৮৬৭ নম্বরের সেই কারের চালক মিজানুর হাতীবান্ধা উপজেলার পূর্ব নওদাবাস গ্রামের আহম্মদ হোসেনের পুত্র। এবং গাড়িতে থাকা অপর আসামী জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার বনচৌকি গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের পুত্র জাহাঙ্গীর আলম (৪০) সুকৌশলে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট গোয়েন্দা শাখার ওসি আমিরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক ভাবে দুই জনকে আসামী করা হয়েছে। গাড়িটির মালিকানা যাচাই বিআরটিএ প্রয়োজনীয় তথ্য চাওয়া হবে। এই মুহুর্তে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।
এদিকে প্রাইভেট কারটি আটক হবার পর জেলা জুড়ে আলোচনা উঠেছে, আটককৃত গাড়িটি সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী সচিব মিজানুর রহমান মিজানের স্ত্রীর।
একাধিক সূত্র জানান, এপিএস মিজানের শ্বশুর পরিবার জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বানি নগর এলাকায় বসবাস করে এবং এপিএস’র স্ত্রী কারটি ব্যবহার করতেন বলে জানা যায়। তবে, ফেন্সিডিলসহ গাড়িটি আটকের সময় এপিএসের পরিবারের কেউ গাড়িতে ছিলেন না।
এ বিষয়ে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী’র একান্ত ব্যক্তিগত সহকারী সচিব মিজানুর রহমান মিজানের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আপনারা গাড়ির মালিকের বিষয়ে কি জানতে পারলেন? গাড়িটি কিন্তু আমার নয়, এ নিয়ে আমাকে জড়িয়ে কিছু লিখলে মামলা দিব। বিষয়টা মন্ত্রী মহোদয় দেখছেন।
উক্ত প্রাইভেট কারের মূল মালিককে বিষয় বিআরটিএর সূত্রে জানা যায়, এর আসল মালিকের ঠিকানা ঢাকার গুলশানে বাসা। তবে, ধারনা করা হচ্ছে এই কারটি মূল মালিককে কাছ থেকে হাত বদল করে বেচাকেনা হয়েছে।
কে এই শাওন:
গাড়িটি আটকের পর রাতে গাড়ির চালকের খোঁজ খবর নিতে লালমনিরহাট সদর থানায় হাজির হন এপিএস মিজানের স্ত্রী’র বড় ভাই শাওন! তিনি রাতে একাধিক বার থানায় ঢুকে আটক চালকের খোঁজ খবর নেন, নাস্তা কিনে দেন এবং চালকের কাছে থাকা শাওনের মোটর সাইকেলের চাবির বিষয় জানতে চান, থানার ভিতর থাকা সেই চালক বলেন, চাবি ডিবি পুলিশের কাছে তখন শাওন রাত ১২ঘটিকার দিকে ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে সেই চাবি নিয়ে চলে যান! এই শাওনের বাড়ি কালীগঞ্জের বানি নগর।
অপর একটি সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ জুলাই আলোর মনিতে “কালীগঞ্জে মাদকের ছড়াছড়ি” শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর কালীগঞ্জ থানা পুলিশ বাহিনী কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে। তাই কাকিনার রুদ্রেশ্বর ও সিরাজুল মার্কেটে কড়া নজরদারি বসিয়েছেন। সে কারণে মাদকসহ প্রাইভেট কারটি মহিপুর রোড়ে না গিয়ে সোজা মহাসড়ক হয়ে লালমনিরহাট আসার পথে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ধরা পড়েছে।
লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এরশাদুল জানান, মাদক আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। একজন আসামী, ফেন্সিডিল ও কার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত আসামীকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। যেহেতু মামলাটি ডিবি পুলিশ করেছে। অন্য কোন তথ্য ডিবি পুলিশের কর্মকর্তা বলতে পারবেন।