মানব সেবার শপথ নিয়েই চিকিৎসকদের চিকিৎসা পেশায় প্রবেশ করতে হয়। চিকিৎসকরা মানুষের জীবন রক্ষায় কাজ করেন। রোগীর পাশে বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো দাঁড়াতে হয় চিকিৎসকদের। লালমনিরহাট জেলায় উন্নত সেবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল। লালমনিরহাটের বেশির ভাগ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র কেন্দ্র লালমনিরহাট সদর হাসপাতালটির সার্বিক অবকাঠামোর সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি, নিয়ম শৃঙ্খলার উন্নতি ও সেবার মান ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে হাসাপাতালের সেবা নিয়েও এলাকার মানুষ বেশ সন্তোষ্ট।
জানা যায়, লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ রমজান আলী এর দক্ষ ব্যবস্থাপনায় অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়েও রোগীরা এখন আন্তরিকতাপূর্ণ সেবা পাচ্ছেন। একশত (১০০) শয্যার লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল এ চিকিৎসক মোট ৩৯জনের স্থলে ১৯জন, সেবিকা ৭৩জনের স্থলে ৬০জন নিয়ে রোগীদের নিয়মিত সেবা দিচ্ছেন হাসপাতাল এর জরুরী ও বহির্বিভাগে।
লালমনিরহাট জেলায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা প্রতিদিন কমবেশী প্রায়১হাজার ৫শতজন রোগীর সেবা নিয়ে থাকে। প্রতিদিন জরুরী বিভাগে প্রায় ৫শতজন রোগী সেবা নিয়ে থাকে। প্রতিমাসে গর্ভবতী মায়ের নরমাল ডেলিভারী করা হয়। এছাড়াও সিজারিয়ান সেকশন অপারেশনের হয়। অপারেশন নিয়মিত হচ্ছে। এখানে এর মধ্যে এপেন্ডিসাইটিস হার্নিয়া ফিশার ফিস্টুলা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের অপারেশন হচ্ছে বলেও জানা যায়। এখন প্রায় ৮০ থেকে ৯০ ভাগ ঔষধ হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হয়ে থাকে এবং ভর্তিকৃত রোগীদের ঔষধ সরবরাহ করা হয়ে থাকে তিনি যোগদানের পর পর এই হাসপাতাল এর দৃশ্যপট একেবারে পাল্টে দিয়েছেন বর্তমান লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোঃ রমজান আলী। তিনি এখানে যোগদানের পর থেকে হাসপাতালের রোগীর খাবার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সুবিধা-অসুবিধাসহ সার্বিক বিষয়ে নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের একাধিক স্বাস্থ্যকর্মী জানান, কিভাবে আরও সহজে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা যায় এ ব্যাপারে প্রতিনিয়ত তাদের সঠিক দিক নির্দেশনা ও পরামর্শ প্রদান করেন।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, নিয়মিত করোনা টিকা দান কার্যক্রমের পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় গণটিকা প্রধান করা হয়েছে।
কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, এই লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোঃ রমজান আলী যোগদানের পর থেকে হাসপাতালে রোগীদের খাবার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। আসলে চিকিৎসকদের একটু দরদি স্পর্শ, একটু সহানুভূতি, একটু হাসিমাখা মুখের কথায় জটিল ও কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিকেও আশাবাদী করে তোলে, রোগযন্ত্রণা ভুলিয়ে দেয়।
তবে সরকারি এই হাসপাতালটিতে চুরি, ছিনতাই, দালালদের দৌরাত্ম্য কিছুটা হলেও কমে এসেছে বলে সাধারণ রোগীদের আত্মীয়-স্বজনরা মনে করছেন।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোঃ রমজান আলী বলেন, পরিকল্পনার অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি। সকল চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, জেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতায় আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি সেবার মান বৃদ্ধিসহ হাসপাতালের উন্নয়ন এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে।
উল্লেখ্য যে, লালমনিরহাট সদর হাসপাতালটি ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হবার পর মাত্র ১০টি বেড নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। পরে ১৯৭২ সালে বেডের সংখ্যা বাড়িয়ে হয় ৩১ শয্যা, ১৯৮৯ সালে ৫০ ও ২০০৫ সালে এই হাসপাতালটি উন্নীত হয় ১০০ শয্যায়।