অবস্থান : লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নে তিস্তা মৌজায় তিস্তা নদীর উপর এ সেতুটির অবস্থান। ‘নর্দান বেঙ্গল স্টেট রেলওয়ে’ কর্তৃক নির্মিত ১৩টি লোহার স্প্যান বিশিষ্ট এ সেতুটি দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রেল-সেতু বলে অভিহিত।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস : নর্দান বেঙ্গল স্টেট রেলওয়ে কোম্পানি ১৮৫৩খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশ ভারতে প্রথম রেলওয়ে সার্ভিস চালু করে। এর পর ১৮৭৯খ্রিষ্টাব্দে দুর্ভিক্ষকালীন সাহায্য-সহযোগিতা প্রদানের জন্য কোলকাতা থেকে পাবর্তীপুর হয়ে উত্তরে রেলপথ সম্প্রসারণের কার্যক্রম শুরু হয়। একই খ্রিষ্টাব্দে পার্বতীপুর থেকে একটি মিটারগেজ রেলপথ রংপুর শহর হয়ে কাউনিয়া পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয়। পরে তা লালমনিরহাটের সাথে যুক্ত হয়। এ সময় তিস্তা নদীর উপর সেতু নির্মাণ সম্ভব না হওয়ায় নদী পারাপারের জন্য বাষ্পীয় ইঞ্জিনযুক্ত ফেরীর ব্যবস্থা করা হয়। অতঃপর ১৮৯৯-১৯০০খ্রিষ্টাব্দে তিস্তা নদীর উপর রেলওয়ে সেতুটি নির্মিত হয়।
১৯৭১খ্রিষ্টাব্দের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে অন্য একটি সেতু থেকে স্প্যান, গার্ডার ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করে ১৯৭২খ্রিষ্টাব্দে তা মেরামত করা হয়। অনেকদিন পর্যন্ত সেতুটি কেবলমাত্র রেল যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হতো। সড়ক যোগাযোগের জন্য বিকল্প একটি সেতু নির্মাণ অত্যন্ত ব্যয়বহুল হবে বলে এর উপর দিয়ে সড়ক যোগাযোগ চালুর সম্ভাব্যতা ও উপযুক্ততা যাচাইয়ের পর ১৯৭৮খ্রিষ্টাব্দের ৪ মার্চ আনুষ্ঠানিক ভাবে সেতুটির উপর দিয়ে রেলওয়ের পাশাপাশি সড়ক যোগাযোগ শুরু হয় । তখন থেকে তিস্তা রেলওয়ে সেতুর উপর দিয়ে রেল ও সড়ক উভয় যোগাযোগ-ই অব্যাহত রয়েছে। সেতুটি লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার সাথে রংপুর সহ অন্যান্য জেলার সংযোগ রক্ষাকারী হিসেবে অদ্যাবধি গুরতত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
কেন বিখ্যাত/ গুরুত্বপূর্ণ : এটি একটি প্রাচীন রেল সেতু হিসেবে বিখ্যাত। এ সেতুটি লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত।
যাতায়াত ব্যবস্থা : লালমনিরহাট থেকে বাসযোগে এ সেতুটি দেখতে যাওয়া যাবে। সড়কপথে দুরত্ব ২০ কিমি। ভাড়া ১৫ টাকা।
আবাসন সুবিধা : সেতুটির আশেপাশে থাকার কোন সুবন্দোবস্ত নাই। রংপুর কিংবা লালমনিরহাট সদরে অবস্থান করতে হবে। -আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট।