আলোর মনি রিপোর্ট: শুক্রবার (৩ জুন) থেকে শনিবার (১১ জুন) পর্যন্ত ৯দিনের লাগাতার বৃষ্টিপাত ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাট জেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা, ধরলা, রত্নাই ও সানিয়াজানসহ প্রায় সকল নদ-নদীর পানি হু-হু করে বৃদ্ধি পেয়ে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে।
লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩৫টি ইউনিয়নই বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। লালমনিরহাট জেলার চারদিকে শুধু পানি আর পানি। বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হওয়ায় বিভিন্ন ফসলি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। সবজি ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
জানা যায়, মানুষ পানিবন্দী হয়ে অমানবিক জীবন যাপন করছেন। এসব মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার কারণে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার অবনতি হয়েছে। অনেক জায়গায় সড়ক পথ ভেঙ্গে গেছে।
এদিকে ধরলা নদীর প্রবল পানির তোড়ে লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের বুমকা (ছয় মাথা) পয়েন্ট এবং কুলাঘাট ইউনিয়নের মিধুয়ারকুটি গ্রামে রত্নাই নদীর ভাঙ্গনে প্রায় ৫০টি পরিবারের ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়েছে। ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে আরও শতাধিক ঘর-বাড়ি। এরই মধ্যে নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়ে চলাচলের রাস্তা অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সেই সাথে সরিয়ে নেয়া হয়েছে মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা। দরিদ্র এলাকাবাসী এতোদিন নিজেরাই চাঁদা ও শ্রম দিয়ে দেশীয় প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ভাঙ্গন প্রতিরোধের চেষ্টা করে আসছিল বলে তারা জানান।
অপরদিকে বড়বাড়ী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বড়বাসুরিয়া মৌজায় ধরলা নদীর ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এবং বড়বাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান হবি, সচিব মোঃ সাইফুল ইসলাম মন্ডলসহ ইউপি সদস্যবৃন্দ।
বিগত ২বছর ধরে উক্ত এলাকার প্রায় ২কিলোমিটার বসতি এলাকা ও আবাদি জমি ধরলা নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। গত কয়েক দিন ধরে পুনঃরায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। যার ফলে বড়বাসুরিয়া জামে মসজিদসহ বড়বাসুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ওয়াপদা বাঁধটি ভাঙ্গনের কবলে যেকোন সময়ে পড়তে পারে/ হুমকির মধ্যে আছে। উক্ত এলাকার জনগণ এর কষ্ট লাগবসহ স্থায়ী ভাবে বাঁধ নির্মাণ এবং সিসি ব্লক স্থাপনের মাধ্যমে বড়বাসুরিয়া মৌজাটি রক্ষা করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।