আলোর মনি রিপোর্ট: লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধ, পাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে কাঁঠালের মুচি। এ বছর কাঁঠাল গাছে ব্যাপক হারে মুচি আসায় কাঁঠালের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা থাকলেও মুচিতে পচঁন ধরায় উদ্বিগ্ন চাষিরা।
কাঁঠাল চাষি মোঃ হযরত আলী বলেন, আমার ১০টি কাঁঠাল গাছ আছে। ব্যাপক পরিমাণে কাঁঠালের মুচি বের হওয়ায় গতবারের চেয়ে বেশি ফলনের আশা করেছিলাম। কিন্তু মুচি পঁচে গিয়ে কালো হয়ে ঝরে পড়ছে।
আরেক কাঁঠাল চাষী নুর আমীন জানান, তার কাঁঠাল গাছের ২০ভাগ মুচি ঝরে পড়ছে। কিভাবে মুচি পঁচা রোগের প্রতিকার করা যায় তা জানা নাই। তবে প্রতিকার করতে পারলে এখনও ভাল ফলন পাওয়া সম্ভব।
কাঁঠাল চাষিদের হতাশা সম্পর্কে ভাটিবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাহেব আলী জানান, নিয়ম মেনে পরিচর্যা করলে কাঁঠালের মুচি পঁচা রোগ রোধ করা সম্ভব। মুচি পঁচা রোগ একটি ছত্রাকজনিত রোগ। এ রোগে কাঁঠালের মুচি প্রথমে বাদামী রঙ ধারন করে এবং পরে তা কালো হয়ে ঝরে যায়। সাধারণত খরা এবং কাঁঠাল গাছের নিচে অপরিচ্ছন্নতার কারণে এ রোগ হয়ে থাকে।
তিনি আরও জানান, আক্রান্ত মুচি ভেজা বস্তায় জড়িয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে যাতে এই জীবানু না ছড়াতে পারে। গাছ থেকে মরা-পঁচা ডাল ভেঙ্গে ফেলতে হবে এবং গাছের নীচে আবর্জনা পরিস্কার করতে হবে। কারণ মুচি পঁচা রোগের জীবানু পঁচা ডাল ও আবর্জনার মধ্যে লুকিয়ে থাকে। তাছাড়া ফলের রোগের লক্ষণ প্রকাশের পর থেকে ১৫দিন পর পর ২বার বার্দোমিক্সার (১%) অথবা ইন্ডোফিল এম-৫ (০.২%) স্প্রে করতে হবে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কৃষকরা বিভিন্ন স্থানের অকৃষিজ পতিত জমি, পুকুরপাড়, কৃষি জমির সীমানা আইল, বাড়ির আশে-পাশে ও উঠানে কাঁঠাল গাছের চারা রোপণ করে থাকেন। কিন্তু বিগত বছরগুলিতে কাঁঠালের ব্যাপক উৎপাদন হওয়ায় এবং বাজারে এর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অনেকে চাষিরাই এখন ব্যাণিজ্যিকভাবে কাঁঠালের চাষ শুরু করেছেন।
ফুলগাছ গ্রামের হরিপদ রায় হরি বলেন, কাঁঠাল বাংলাদেশের জাতীয় ফল। এ ফলের সঙ্গে বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য মিশে আছে। গ্রাম-গঞ্জে কাঁঠাল পাকার মৌসুমে আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত করে কাঁঠাল খাওয়ানোর রেওয়াজ চালু রয়েছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মুকুল বলেন, কাঁঠাল চাষের জন্য এ এলাকার মাটি ও আবহাওয়া অনেক উপযোগী। কৃষি বিভাগের পরামর্শ মেনে পরিচর্যা করলে এবং কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে কাঁঠালের বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে।