আলোর মনি রিপোর্ট: লালমনিরহাট জেলায় টিসিবি’র ২৩জন পরিবেশকের মধ্যে ২০জন পরিবেশক নিয়মিত টিসিবি’র পণ্য বিক্রয় করছেন। তবে বেশির ভাগ পরিবেশক পণ্য বিক্রির নিয়ম মানছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতা সাধারণ। এতে লালমনিরহাট জেলায় টিসিবি’র পণ্য বিক্রির কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। অনেক পরিবেশকের বিরুদ্ধে পণ্য তুলে কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগও রয়েছে।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলায় ২৩জন টিসিবি’র পরিবেশক রয়েছেন। তন্মধ্যে মধ্যে লালমনিরহাট সদর উপজেলায় ১০জন, আদিতমারী উপজেলায় ৫জন, কালীগঞ্জ উপজেলায় ৪জন, হাতীবান্ধা উপজেলায় ২জন ও পাটগ্রাম উপজেলায় ২জন। তবে হাতীবান্ধা উপজেলার ২জন পরিবেশক ও পাটগ্রাম উপজেলার ১জন পরিবেশক দীর্ঘদিন যাবৎ টিসিবি কার্যালয় থেকে পণ্য উত্তোলন করছেন না বলে জানা যায়।
এদিকে সারাদেশে ট্রাকসেলের মাধ্যমে ন্যায্য মূল্যে সয়াবিন তেল, চিনি, মশুর ডাল, ছোলা ও পেয়াজ বিক্রি করছে টিসিবি। কিন্তু লালমনিরহাটে ট্রাকসেল না দিয়ে নির্দিষ্ট কোনো দোকানে প্যাকেজের কথা বলে ক্রেতাদের অতিরিক্ত পণ্য চাপিয়ে দিচ্ছেন ডিলাররা। একটি প্যাকেজে সয়াবিন তেল ৪কেজি, ছোলা ৫কেজি, চিনি ২কেজি, মশুর ডাল ১কেজি , পেয়াজ ২কেজি ও খেজুর ১কেজি যার মূল্যে ৯শত ৬০টাকা। চাইলেই প্যাকেজের বাহিরে কেউ পণ্য কিনতে পারবেন না।
একদিকে ট্রাকসেলের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি না করায় অন্যান্য এলাকার ক্রেতাগণ ন্যায্যমূল্যে পণ্য ক্রয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং প্যাকেজের নাম করে ক্রেতাদের অতিরিক্ত পণ্য চাপিয়ে দেওয়ায় টিসিবি’র পণ্য কিনতে আগ্রহ হারাচ্ছেন খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। আর এই সুযোগে কিছু অসৎ পরিবেশক কালোবাজারে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন। এ বিষয়ে টিসিবির একাধিক পরিবেশকের সাথে প্যাকেজের বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তারা কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে করোনা পরিস্থতির কারনে তারা ট্রাকসেল দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন।
রিক্সাচালক আমজাদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, ভাই সারাদিনে রিক্সা চালিয়ে ৩-৪শত টাকা ইনকাম করি। কমদামে টিসিবির পণ্য কিনতে আসলাম কিন্তু প্যাকেজ কেনার সামর্থ আমার নেই ,তাই ফিরে যাচ্ছি।
টিসিবি’র পণ্য কিনতে আসা শ্রমজীবী নারী লাকী বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমি ৩কিলোমিটার দূর থেকে টিসিবি’র পণ্য কিনতে এসেছি। আমাদের যে পণ্যটার দরকার নেই তারা সেটাও নিতে বলে। আমরা গরীব মানুষ এতগুলো পণ্য একসাথে কেনার সামর্থ আমাদের নেই।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী কার্যনির্বাহী মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, টিসিবি’র পণ্য প্যাকেজ আকারে কোনো ভাবেই বিক্রি করা যাবে না, এ বিষয়ে অফিস অর্ডার করা আছে। যদি কোনো ডিলারের বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তার ডিলারশিপ বাতিলের বিষয়ে আমরা সুপারিশ করবো।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবু জাফর সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাকসেল ও প্যাকেজের বিষয়ে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অবহিত করবো, টিসিবি’র যে নির্দেশনা আছে তার বাহিরে যাওয়ার তো সুযোগ নেই। তবে টিসিবি’র পণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয় উপযোগী এবং সহনশীলতার মধ্যে হয় তা করার জন্য প্রস্তুত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।