আলোর মনি রিপোর্ট: আবুল খায়ের টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্তৃক পরিচালিত লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার খামারটারী সরলখা গ্রামে অবস্থিত একটি কারখানার টিনশেড ঘর ভেঙে কর্মরত অবস্থায় শিশুসহ ১০জন শ্রমিক আহত হয়েছে।
তাছাড়াও তামাক কারখানায় শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। কারখানায় সামাজিক দুরত্ব দুরের কথা, জটলাবাধা কর্মরত কোন শ্রমিকের মুখে মাস্ক ছিল না। এ জন্য মালিকদের উদাসীনতাকে দায়ী করা হচ্ছে। সেখানে নভেল করোনা ভাইরাসের কোন বালাই নাই। মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সরলখায় অবস্থিত আবুল খায়ের টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এ দুর্ঘটনা ঘটে। ওই সময় আহত শ্রমিকরা হলেন, কেচু মিয়া (৫৫), কালাম (৪০), মকবুল (৬০), আল আমিন (২২), আয়শা বেওয়া (৫২), সোলেমান (৬০), আলম (৮) ও নাইম (১০) নামের শিশুসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকরা জানান, সরলখায় অবস্থিত আবুল খায়ের টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড- জরাজীর্ণ ওই ঘরে দীর্ঘদিন যাবত তারা কাজ করে আসছিল। ঘরটি পুরাতন ও ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় শ্রমিকরা বার বার মেরামত করার দাবী জানালেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ঘরটি মেরামত করা হয়নি। জরাজীর্ণ ঘরভর্তি শিশুসহ অন্যান্য নারী পুরুষ শ্রমিকরা কাজ করছিল। মঙ্গলবার হঠাৎ আকস্মিক ভাবে ঘরটি ভেঙে কর্মরত শ্রমিকের মাথায় পড়ে যায়। এতে ঘরভর্তি শিশুসহ অন্যান্য নারী পুরুষ ১০জন শ্রমিক আহত হয়। ওই সময় অন্যন্যা শ্রমিকরা এদিক সেদিক ছুটাছুটি করে প্রাণে বেচে যান। উক্ত সময় স্থানীয়দের সহায়তায় ফ্যাক্টরির পাশে অবস্থিত জায়েদ আলীর বাড়ীতে আহতদের চিকিৎসা দেয়া হয়। খবর পেয়ে আদিতমারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উত্তেজিত শ্রমিকদের শান্ত করে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন। উল্লেখ্য যে, লালমনিরহাটে ছোট-বড় যেকটি তামাক কারখানা আছে। তারমধ্যে শীর্ষে রয়েছে আবুল খায়ের টোব্যাকো লিমিটেড। প্রতিষ্টানটি আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের খামারটারী সরলখা গ্রামে অবস্থিত। প্রতিটি কারাখানাতেই সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তামাক কারখানায় শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। কারখানায় সামাজিক দুরুত্ব দুরের কথা, কর্মরত কোন শ্রমিকের মুখে মাস্ক ছিল না। যেন সেখানে নভেল করোনা ভাইরাসের কোন বালাই নাই। এ জন্য মালিকদের উদাসীনতাকে দায়ী তামাক ক্রাসিং, গুল, খইনি, ভেজাপাতাসহ তামাকজাত দ্রব্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এসব কারখানায় শিশু, নারী-পুরুষ মিলে কর্মরত রয়েছেন অসংখ্যক শ্রমিক।
চিকিৎসকরা বলছেন, তামাকের তিকর উপাদান শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ফুস ফুসে গিয়ে জটিল রোগ হয়। যা মানব শরীরের জন্য ভয়াবহ। কারখানা আইনে ১০জনের বেশি শ্রমিক কারখানায় কাজ করলে তিন মাস পর পর তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু কারখানা মালিকরা তা মানছেন না। এছাড়া তামাক নির্ভর শিল্প কারখানার পরিবেশ স্বাস্থ্যসম্মত আছে কিনা, সেটিও কখনও পরীক্ষা করে দেখা হয় না।
ওই চিকিৎসক আরও বলেন, এ বিষয়ে শ্রমিক কর্মচারীদের মাঝে যেমন সচেতনতা বাড়ানো দরকার, তেমনি কারখানার মালিকদের ব্যাপারেও আইনী প্রয়োগ হওয়া দরকার।
এ ব্যাপারে তামাকজাত কোম্পানীতে প্রশাসনের উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ জরুরী হয়ে পড়ে বলে সচেতন মহল দাবী করেছেন।
এ বিষয়ে সরলখা আবুল খায়ের টোব্যাকো লিমিটেড-এর ম্যানেজার বদরুল ইসলাম এর সাথে যোগোযোগ করা হলে আহত শ্রমিকদের ব্যাপারে কোন সু-উত্তর দিতে পারেনি।