শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
বিএনপি সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে: লালমনিরহাটে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু লালমনিরহাটে এলসিসিআই মডেল স্কুলের পাঠ সমাপনী ২০২৪খ্রি. অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে দিন দিন কমছে আখ চাষ লালমনিরহাটের শালবন হতে পারে পর্যটন কেন্দ্র লালমনিরহাটে মানব পাচার প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কর্মশালা অনুষ্ঠিত লালমনিরহাট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে নির্বাচিত হলেন যাঁরা! সার সিন্ডিকেট হোতারা ধোঁয়া ছোঁয়ার বাহিরে কেন লালমনিরহাটে তামাকের বিষে কমছে জমির ঊর্বরতা; বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি লালমনিরহাটে জেন্ডার-সংবেদনশীল দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকরণ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিযোজন বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে আত্মনির্ভরশীল দল এবং ইউডিএমসি এর মধ্যে অ্যাডভোকেসি এবং লবিং মিটিং অনুষ্ঠিত
ডঃ এ,পি,জে আব্দুল কালাম ভারতের রাষ্ট্রপতি

ডঃ এ,পি,জে আব্দুল কালাম ভারতের রাষ্ট্রপতি

ভারতের নিরাপত্তা রক্ষার প্রাণ পুরুষ পরমানু বোমার উদ্ভাবক ডঃ এ,পি,জে, আব্দুল কালাম যখন ভারতের রাষ্ট্রপতি তখন তাঁর সচিব হিসাবে দায়িত্ব  পালন করেন মিঃ টি,কে,এ, নায়ার। মিঃ নায়ার এক সাক্ষাৎকারে বলেন– ডঃ কালাম রাষ্ট্রপতি হিসাবে বিদেশ ভ্রমনে গেলে যেসব মূল্যবান উপহার সামগ্রী পেতেন তা দেশে ফিরে সেগুলোর ফটো তুলে ক্যাটালগে লিপিবদ্ধ করার পর রাষ্ট্রপতির তোষাখানায় পাঠাতেন। প্রতি বছর রমজান মাসে রাষ্ট্রপতি ভবনে ইফতার পার্টি দেওয়ার রেওয়াজ ছিল। ২০০২ সালে যখন ডঃ আব্দুল কালাম ভারতের রাষ্ট্রপতি তখন রমজান মাসে তাঁকে ইফতার পার্টি আয়োজনের কথা বলা হলো। তিনি মিঃ নায়ারকে জিজ্ঞেস করলেন, বাজেট কত? বলা হলো ২২লাখ রুপি। তিনি বললেন, যাদের পেটে খাবার আছে তাদেরকে খাওয়ানোর প্রয়োজন নাই। ঐ বরাদ্দকৃত টাকায় দরিদ্র এতিমদের জন্য খাবার ও পোশাক কিনে দিতে বললেন। আর তিনি ব্যক্তিগতভাবে গোপনে ১লাখ টাকা দিয়ে ঐ টাকার সাথে যোগ করতে বললেন। ডঃ আব্দুল কালাম তাঁর সব কথার সাথে সেক্রেটারীর জ্বি হুজুর বলা পছন্দ করতেন না। একবার ভারতের প্রধান বিচারপতি তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করতে এলেন। কোন এক বিষয়ে ডঃ আব্দুল কালাম তাঁর সেক্রেটারী নায়ারকে বললেন, তুমি কি আমার এই কথার সাথে একমত? মিঃ নায়ার সোজা উত্তর দিলেন– না স্যার, আমি আপনার সাথে একমত নই। প্রধান বিচারপতি মিঃ নায়ারের উত্তর শুনে অবাক হলেন। একজন সিভিল সার্ভেন্ট কি করে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কোন মতামতের সাথে সরাসরি দ্বিমত পোষন করতে পারে? এ বিষয়ে মিঃ নায়ার বলেন, রাষ্ট্রপতি ডঃ  আব্দুল কালাম তখন কিছুই বলতেননা। পরে একান্তে তাঁর সাথে সেক্রেটারী নায়ারের দ্বিমত পোষনের কারন জানতে চাইতেন। যদি দেখতেন যে, তাঁর সেক্রেটারীর ব্যাখ্যা ৯৯% যৌক্তিক, তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতেন। ডঃ আব্দুল কালাম একবার তাঁর ৫০জন আত্মীয়কে দিল্লীতে আমন্ত্রণ জানালেন এবং রাষ্ট্রপতি ভবনের অতিথিশালায় থাকার ব্যবস্থা করলেন। তাদেরকে দিল্লী শহর দেখানোর জন্য একটি বাস ভাড়া করলেন। বাসের ভাড়া ও তাদের থাকা খাওয়ার বিল হলো দুই লাখ টাকা, যা তাঁর নিজ পকেট থেকে পরিশোধ করলেন। একবার ডঃ আব্দুল কালামের ইচ্ছে হলো তাঁর বড় ভাই রাষ্ট্রপতি ভবনে তাঁর শয়ন কক্ষে কয়েকদিন থাকুন। দু’ভাই এক সাথে দু’সপ্তাহ থাকলেন। সে কয়দিনের টাকাও তিনি হিসাব করে নিজ পকেট থেকে দিলেন। ডঃ কালাম তাঁর মেয়াদ শেষে বিদায়ের সময় রাষ্ট্রপতি ভবনের সকল ষ্টাফ তাঁর সাথে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে এলেন। মিঃ নায়ারও এলেন, কিন্তু একাকী। ডঃ কালাম মিঃ নায়ার কে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার স্ত্রী এলেন না? মিঃ নায়ার বললেন তাঁর স্ত্রীর পায়ের হাড় ভেঙ্গে যাওয়ায় আসতে পারেননি, বাসায় শয্যাশায়ী আছেন। পরের দিন ভোরে মিঃ নায়ার দেখেন, তাঁর বাসভবনের চারিদিকে পুলিশ। কারন জিজ্ঞেস করে জানতে পারলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি সেক্রেটারীর অসুস্থ্য স্ত্রীকে দেখতে তাঁর বাসায় আসছেন! মিঃ নায়ার বলেন, ভারত কেন, বিশ্বের কোন দেশের রাষ্ট্রপতিই তাঁর অধীনস্থ কর্মচারীর বাসায় এভাবে যাননা। নায়ার বলেন ডঃ আব্দুল কালাম যখন ভারতের রাষ্ট্রপতি তখন তাঁর ছোট ভাই ছোট্ট একটি দোকানে বসে ছাতা মেরামতের কাজ করতেন। মিঃ নায়ার বলেন, ডঃ আব্দুল কালামের মৃত্যুর পর শেষকৃত্যের সময় তিনি গিয়েছিলেন– এবং সেখানে তিনি শ্রদ্ধাবনত চিত্তে ডঃ কালাম ও তাঁর সেই ছোট ভায়ের পা ছুঁয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন। ডঃ কালাম যখন মারা যান তখন তাঁর রেখে যাওয়া সম্পত্তির মধ্যে ছিল– ৬টি প্যান্ট (২টি সামরিক ইউনিফর্মসহ), ৪টি শার্ট (২টি সামরিক ইউনিফর্মসহ), উল্লেখ্য যে, পরমানু বোমা আবিষ্কারের জন্য তিনি ভারতের সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব পদধারী ছিলেন,সেই সুবাদে সামরিক ইউনিফর্ম পান। আর ছিল ৩টি স্যুট (১টি পশ্চিমা, ২টি ভারতীয়), দেশ বিদেশের চল্লিশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরেট সনদ, ২,৫০০ বই, ১টি ফ্লাট যা তিনি দান করে গেছেন, ১টি পদ্মভূষন পদক, ১টি ভারতরত্ন পদক, ১টি ওয়েবসাইট, ১টি টুইটার একাউন্ট, ১টি ই মেইল আইডি। তিনি কোন টিভি, এসি, গাড়ী, অলংকার, শেয়ার, জমি বা ব্যাংক ব্যালান্স কিছুই রেখে যাননি। রাষ্ট্রপতি হিসাবে ৮বছরের পেনশনের টাকাগুলিও তাঁর গ্রামের উন্নয়নের জন্য দান করে গেছেন। ভারত তাঁর মত সৎ, জ্ঞানী, যোগ্য ও মহান রাষ্ট্রপতি কখনো দেখেনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone