আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: উৎপাদন খরচ না ওঠায় গম চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে লালমনিরহাটের কৃষকেরা। গত কয়েক বছর সরকারের কাছে গম বিক্রি করতে না পারাসহ ক্রমাগত লোকসানে পরে এখন অন্য ফসল উৎপাদনে ঝুঁকছেন তারা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরও বাজারে দাম না পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনে গম উৎপাদনও হ্রাস পাচ্ছে। তবে এ অবস্থা কাটাতে উন্নত জাতের গম আবাদের পরামর্শ দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
লালমনিরহাটে কৃষিজাত ফসলের অন্যতম আবাদ ছিল গম। এক সময় ব্যাপক হারে গম উৎপাদন হতো লালমনিরহাট জেলায়।
শীত দীর্ঘমেয়াদি থাকাসহ আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ লালমনিরহাট জেলায় গমেরও বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু সরকারের ঘোষিত ন্যায্য দরে সংগ্রহ অভিযানে গম দিতে না পারা, বাজার নিম্নমুখী হওয়ায় ক্রমাগত লোকসান গুনতে হয়েছে চাষিদের। তাই এ জেলায় গমের আবাদও কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে।
কৃষকদের অভিযোগ, উৎপাদন খরচ না ওঠায় গমের আবাদ থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন তারা। তাই এখন বিকল্প ফসল উৎপাদনে ঝুঁকছেন তারা।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার ফুলগাছ গ্রামের কৃষক হযরত আলী বলেন, গমের ফলন কমছে। তারপর গম বিক্রি করে দাম কম পাই। খরচও ওঠে না।
ওই উপজেলার মকড়া ঢঢ গাছ গ্রামের হেলাল হোসেন কবির বলেন, সরকারের গম সংগ্রহে কৃষকরা গম দিতে পারে না। সরকার গমের উচ্চ দাম ঘোষণা করলেও এর সুফল পায় সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। তাই গম চাষে আগ্রহ তেমন নাই।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মারুফা ইফতেখার সিদ্দিকা জানান, কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ ২শত ৫জন কৃষককে গম চাষের জন্য ৪হাজার ১শত কেজি বীজ, ২হাজার ৫০কেজি ডিএপি সার ও ২হাজার ৫০কেজি এমওপি সার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় গম ফসল আবাদী এলাকা ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের জন্য ২শত ১০জন কৃষককে গম চাষের জন্য ৪হাজার ২শত কেজি বীজ, ২হাজার ১শত কেজি ডিএপি সার ও ২হাজার ১শত কেজি এমওপি সার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, গমের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করে চাষিদের গম আবাদে উৎসাহ প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা না করলে আগামীতে এ জেলায় গম আবাদে ভাটা পড়বে। ফলে গম উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।