শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে তামাকের বিষে কমছে জমির ঊর্বরতা; বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি লালমনিরহাটে জেন্ডার-সংবেদনশীল দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকরণ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিযোজন বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে আত্মনির্ভরশীল দল এবং ইউডিএমসি এর মধ্যে অ্যাডভোকেসি এবং লবিং মিটিং অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত পাটগ্রামে শহীদ জিয়া স্মৃতি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট অনুষ্ঠিত গণতন্ত্র আমাদের হাতের নাগালে নাই-লালমনিরহাটে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় লালমনিরহাটে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ও ঔষধ সেবা অর্ধেক মূল্যে হত দরিদ্রদের ছানি অপারেশন অরবিট চক্ষু হাসপাতালে লালমনিরহাটে শীতের হরেক রকমের পিঠার দোকানের পসরা নিয়ে বসছেন বিক্রেতারা বিএনপির কর্মী সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত বাবা-মাকে একটা বাড়ি করে দেওয়ার স্বপ্ন যেন চিরতরে হারিয়ে গেলো লালমনিরহাটের শহীদ শাহিনুর আলমের
লালমনিরহাটে বিলুপ্তির পথে তিস্তা-ধরলা নদীর সুস্বাদু বৈরালি মাছ

লালমনিরহাটে বিলুপ্তির পথে তিস্তা-ধরলা নদীর সুস্বাদু বৈরালি মাছ

আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: লালমনিরহাট জেলার তিস্তা ও ধরলা নদীতে পানি সংকটে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী বৈরালি মাছ। ব্যাপক চাহিদা থাকলেও সুস্বাদু এই মাছটি জেলেদের জালে আর আগের মতো ধরা পড়ে না। যেটুকু পাওয়া যায় বাজারে তা বিক্রি হয় অত্যধিক চড়া মূল্যে। দেশের উত্তরাঞ্চলে অসম্ভব জনপ্রিয় এই মাছের সংকট স্থানীয়দের মধ্যে গভীর হতাশার জন্ম দিয়েছে। এলাকাবাসীসহ বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, উজানে ভারতের একাধিক জায়গায় ও বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধায় সেচের জন্য বাঁধ দেওয়ার ফলে তিস্তা নদীতে স্রোত কমে চর পড়ে যাওয়ায় এবং ধরলা নদীর বাংলাদেশ অংশে পানি কম প্রবাহিত হওয়ায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে বৈরালি মাছ। একই কারণে নদীর দেশি প্রজাতি মাছের সংখ্যাও কমে গেছে মারাত্মকভাবে। হারিয়ে গেছে শুশুক, ঘড়িয়াল, মিঠা পানির কচ্ছপসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী।

স্থানীয়ভাবে বৈরালি বা বৈরালী নামে পরিচিত এই মাছটিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ডাকা হয় বোরালি নামে। বই-পত্রেও এটি বোরালি নামে চিহ্নিত। বোরালি মাছের বৈজ্ঞানিক নাম-বারিলিয়াস বারিলা (Barilius Barila)। এটি মূলত স্বচ্ছ পানির মাছ। পাহাড় বেয়ে নেমে আসা নদী তিস্তা-ধরলায় এই মাছ পাওয়া যায়। তিস্তা-ধরলার ধারা নামায় ব্রহ্মপুত্র নদীতেও এই মাছ কিছু পরিমাণে মেলে। বাংলাদেশে কেবল উত্তরের জেলা লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামেই এই মাছ পাওয়া গেলেও বৈরালি বা বোরালি মাছের বিস্তার ভারত, নেপাল, মিয়ানমারের পাহাড়ি নদীগুলো জুড়েই।

বোরালি মাছ সর্বোচ্চ ৬-৭ইঞ্চি বা ১০সেন্টিমিটার লম্বা এবং প্রস্থে প্রায় ১ইঞ্চি আকারের হয়ে থাকে। রূপালী রঙের মাছটির গায়ে ছোট ছোট আঁশ, পিঠের রং হালকা মেটে। পেটের নিচে হলুদ দাগ থাকে। মাছটির পুঁটি মাছের মতো কাঁটা থাকলেও তা খুবই নরম। বৈরালি মাছ গ্রীষ্মকালীন সময়ে বংশ বিস্তার করে থাকে।

দ্রুতগতির এই মাছটির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অনেকটা ইলিশ মাছের মতোই। তীব্র স্রোতে উজানের দিকে ছুটে চলে বোরালির ঝাঁক। দিনের বেলা গভীর পানিতে সরে গেলেও সাধারণত বিকাল থেকে রাতের দিকে মাছটি নদীর কিনারের দিকে পানির ওপরের স্তরে ঝাঁক বেঁধে চলে আসে। জেলেরা ছোট ছোট ‘চটকা জাল’ (হাতে টানা জাল) দিয়ে বৈরালি শিকারও করেন বিকাল থেকে রাতের মধ্যেই।

 

জেলেরা জানিয়েছেন, ইলিশ মাছের মতোই বৈরালি মাছ জালে ধরার পড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যায়। আবার দ্রুত বরফ দিতে না পারলে বেশিক্ষণ সংরক্ষণও করা যায় না।

 

জানা গেছে, তিস্তা ও ধরলা নদীর উজানে ভারত বাঁধ নির্মাণ করে সেচ কাজের জন্য এক তরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ভাটিতে তথা বাংলাদেশ অংশে তিস্তা ও ধরলায় প্রকট আকারে পানি সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এই দুই নদী থেকে বৈরালি মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণির বিলুপ্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

 

এদিকে বর্তমানে সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপকেন্দ্রে মাছটির বংশ বিস্তার এবং পুকুরে চাষযোগ্য কি না তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।

 

লালমনিরহাট জেলা মৎস্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলায় তিস্তা, ধরলা, রত্নাই, সানিয়াজানসহ মোট ১৩টি নদী রয়েছে। এসব নদী মোট ১হাজার ৯শত ৬১হেক্টর জমির মধ্যে রয়েছে। তাছাড়াও জলাশয়ের মধ্যে বিল ১হাজার ১শত ৯৬হেক্টর, পুকুর ২হাজার ৫শত ৩৩ দশমিক ৪২হেক্টর, ধান ক্ষেত ১হাজার ৬শত ৩৪হেক্টর, বরোপিট ১শত ১৩দশমিক ৮০হেক্টর, পেন কালচার ১শত ৫০দশমিক ৫০হেক্টর, প্লাবন ভূমি ২হাজার ২শত ১০দশমিক ৪০হেক্টর ও খাল ২শত ৮৬হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ ও উৎপাদন হয়ে থাকে। এসব উৎস থেকে সারাবছর ১৮হাজার ৪শত ৬০মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়ে থাকে। তবে লালমনিরহাট জেলাবাসীর সারা বছরের মোট চাহিদা থেকে এই উৎপাদন ১০হাজার ১শত ২৪দশমিক ৯৩মেট্রিক টন কম।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone