হেলাল হোসেন কবির: লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী এলাকায় কোরআন শরিফকে অবমাননা করায় একজন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার পর তার মৃতদেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় জনতা।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) বুড়িমারী বাজার মসজিদে আছরের নামাজের পর অপরিচিত ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে মিনারের উপর থাকা কোরআন শরিফকে অবমাননা করেছেন। পরে মুসল্লিরা তাকে এলোপাতারী মারতে মারতে পাশের ইউনিয়ন পরিষদের রুমে আটকে রাখে। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ জড়ো হয়ে পরিষদের রুম ভেঙ্গে বাহির করে তাকে পিটাতে থাকে।
এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তির মোটর সাইকেলটিতে আগুন লাগিয়ে দেয়। সেই আগুনে পিটানো ব্যক্তিকে হত্যা করে তার মৃতদেহে আগুন পুড়িয়ে দেয়।
স্থানীয়রা জানায়, কোরআন শরিফ অবমাননাকে কেন্দ্র করে একজনের মৃত্যু ঘটে অপরজনকে পুলিশ এসে রক্ষা করে।
জানতে চাইলে ওই মসজিদের খাদেম জুবেদ আলী বলেন, ‘আমাকে ওই ব্যক্তি র্যাব ও আর্মির পরিচয় দিয়েই মসজিদের কোরআন শরীফ ও হাদীস রাখার তাকে না কি অস্ত্র আছে বলে খুজতে শুরু করে। এক পর্যায়ে সবকিছু তছনছ করে। এ সময় মসজিদের বাইরে অবস্থান করা হোসেন আলী (৩৫) নামে এক মুসল্লিসহ ৫/৬জন মুসল্লি মসজিদের ভেতরে ঢুকে তাকে আটক করে বাইরে নিয়ে আসে। মসজিদের বারান্দায় থাকা অপরজনকেসহ অপরিচিত দুই ব্যক্তিকে মসজিদের বারান্দার সিড়িতে মারধর করছিল। পরে হাফিজুল ইসলাম মেম্বার এসে তাদেরকে নিয়ে যায়। এরপর কি কি হয়েছে আমি জানি না।’
পাটগ্রাম পুলিশ জানায়, মৃত্য ব্যক্তির রংপুর শহরের শালবান এলাকার আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে শহিদুন্নবী জুয়েল। তার সাথে থাকা অপর ব্যক্তি রংপুর মুন্সিপাড়ার আব্বাসের ছেলে সুলতান জুয়েল (৫৫)।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, “যতটুকু শুনেছি দু’জন লোক মসজিদের সামনে মোটর সাইকেল রেখে মসজিদের ভিতর আছরের নামাজ পড়তে যায়। তো নামাজ পড়া শেষে, যে কোনো কারণেই হোক তাদের সঙ্গে মসজিদে যারা ছিল, তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। ওনারা নাকি একটা শেলফে পা দিয়েছিলেন। তো সেটা নিয়ে কেউ বলছেন কোরআন শরীফের ওপর পা পড়েছে- এরকম একটা গুজব হয়তো ছড়িয়ে পড়েছে।”
নিমেশেই অনেক লোকজন জড়ো হয়ে যায়। সে সময় পুলিশ আসে। এর মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের একজন মেম্বার তাকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের একটা রুমের মধ্যে আটকে রাখে। পুলিশ আশার মধ্যেই অনেক লোক জড়ো হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রিল ভেঙে বিভিন্ন দিক দিয়ে লোকজন ঢোকে। দুজন ছিল। তাদের একজনকে জোর করে নিয়ে যায়। পুলিশ একজনকে রক্ষা করতে পারছে। আরেকজনকে তারা ওইখানে পিটিয়ে মেরেছে। লাশটা তারা নিয়ে গেছে এবং আগুন দিয়েছে।