লালমনিরহাটে পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকায় ক্রেতারা স্বস্তিতে দ্রব্যমূল্য ক্রয় করছেন। অন্যান্য সময়ে পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা গেলেও এ রমজানে ব্যতিক্রমী চিত্র দেখা গেছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার বাজার তদারকি এবং বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে চিনি, ডাল, খেজুর, পেঁয়াজ, শসা, আলু, টমেটো, ডিম, রসুন, কাঁচা মরিচ, শুকনো মরিচ, আদাসহ বেশিরভাগ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গত বছরের তুলনায় এ বছর অনেকটাই সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা সদরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রোজার নিত্যপণ্য হিসেবে পরিচিত প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯০টাকা থেকে ১০০টাকা, খেজুর মানভেদে ১৫০টাকা থেকে ৫৫০টাকা, লেবু হালি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০টাকা থেকে ৪৫টাকা। মসুর ডাল মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ১০০টাকা থেকে ১৩০টাকা, খেসারির ডাল ১১০টাকা থেকে ১২০টাকা, শুকনা বুন্দিয়া কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৮০টাকা থেকে ২০০টাকা, ফ্রেশ সয়াবিন তেল এক লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৭৫টাকা, রূপচাঁদা সয়াবিন তেল ১৭৫টাকা, চিনি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১৮টাকা থেকে ১২০টাকা, মুড়ি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬৫টাকা থেকে ৭০টাকা, চিড়া কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০টাকা। সেই সাথে স্থিতিশীল সবজির বাজারও।
আলু মান ও জাতভেদে ১৪টাকা থেকে ৩০টাকায় কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে। পিঁয়াজ প্রতি কেজি ১৫টাকা থেকে ৪০টাকা, রসুন প্রতি কেজি ১০০টাকা থেকে ১৬০টাকা, আদা ১০০টাকা থেকে ১২০টাকা, শুকনা মরিচ এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) ৯০টাকা থেকে ১০০টাকা, বেগুন ২০টাকা থেকে ৩০টাকা, কাঁচা মরিচ ৩৫টাকা থেকে ৪০টাকা, সিম জাতভেদে ২০টাকা থেকে ৪০টাকা, করলা ৭০টাকা থেকে ৮০টাকা, পটল ৯০টাকা থেকে ১০০টাকা, টমেটো ৬টাকা থেকে ১২টাকা, পেঁপে ১৫টাকা থেকে ২০টাকা, ফুলকপি ১০টাকা থেকে ১২টাকা, বাধাকপি ৫টাকা থেকে ১০টাকা, গাজর ১০টাকা থেকে ১৫টাকা, শশা ১৫টাকা থেকে ১৮টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি প্রতি ২০টাকা থেকে ২৫টাকা, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ১৫টাকা থেকে ২৫টাকায়।
বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও সহনশীল পর্যায়ে রয়েছে। প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৮টাকা থেকে ৪০টাকায়। ব্রয়লার মুরগি আস্ত প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০থেকে ১৮০টাকায়। সোনালি মুরগি আস্ত কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৮০টাকা, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৮০টাকা থেকে ৭০০টাকা। খাসির মাংস ৯০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া বাজারগুলোতে এক কেজি শিং মাছ আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৬০টাকা থেকে ৫০০টাকা পর্যন্ত, প্রতি কেজি রুই মাছ ২২০টাকা থেকে ৩০০টাকা, চাষের পাঙ্গাস ১৪০টাকা থেকে ২৬০টাকা, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৪০০টাকা থেকে ৫০০টাকা, বড় কাতল ২৫০টাকা থেকে ৪৫০টাকা, পাবদা মাছ ২৪০টাকা থেকে ৩৫০টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজারে এসে বড়বাড়ী এলাকার শামীম ইসলাম বলেন, সরকারের বিভিন্ন সংস্থার তদারকি এবং বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে মনে হচ্ছে এবার রমজানে মোটামুটি সবজি ও মুদি পণ্যের দাম অনেকটাই স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।
তিনি বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এই রমজানে সবজির দাম কম থাকায় স্বস্তিতে সবজি কিনতে পেরেছি।
শামীম আরও বলেন, মাছ, মাংস ও মুরগির দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
কাঁচা বাজারের মুরগি বিক্রেতা লিটন মিয়া বলেন, সরকারের তদারকি কার্যক্রমের কারণে মুরগির দাম আগের বছরের তুলনায় অনেকটাই স্বাভাবিক।
তিনি আরো বলেন, আমরা এখানে ক্রয়-বিক্রয় করি। খুব বেশি লাভ করার সু্যোগ নেই। সরকার যদি সিন্ডিকেটগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে তাহলে মুরগির দাম আরও কমার সুযোগ রয়েছে।
মহেন্দ্রনগর বাজারের মাছ ব্যবসায়ী সালাম মিয়া বলেন, বাজারে মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক। তবে রমজান আসার সাথে সাথে মাছের চাহিদা বাড়লেও গত রমজানের চেয়ে মাছের বাজার স্বাভাবিক রয়েছে।
কথা হয় লালমনিরহাট শহরের গোশালা বাজারের সবজি আড়ৎদার আইয়ুব আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, এ বছর পেঁয়াজ, আলু, টমেটো, কাঁচা মরিচ ও ডিমের দাম অনেকটাই ন্যায্য ও যুক্তিসঙ্গত।
লালমনিরহাট সদরের বড়বাড়ী বাজারের সবজি ইজারাদার মোসারব আলী বলেন, আড়তে এখন প্রচুর পরিমানে সবজি উঠছে। ফলন ভালো হওয়ায় সরবরাহ বেড়েছে ব্যাপকভাবে, তাই সবজির দাম কমছে তবে সবজির দাম বাড়ার তেমন সম্ভাবনা নেই।
উল্লেখ্য যে, শহর ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বাজারগুলোতে পাইকারি ও খুচরা দামের সামান্য কিছু পার্থক্য রয়েছে।