শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত পাটগ্রামে শহীদ জিয়া স্মৃতি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট অনুষ্ঠিত গণতন্ত্র আমাদের হাতের নাগালে নাই-লালমনিরহাটে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় লালমনিরহাটে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ও ঔষধ সেবা অর্ধেক মূল্যে হত দরিদ্রদের ছানি অপারেশন অরবিট চক্ষু হাসপাতালে লালমনিরহাটে শীতের হরেক রকমের পিঠার দোকানের পসরা নিয়ে বসছেন বিক্রেতারা বিএনপির কর্মী সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত বাবা-মাকে একটা বাড়ি করে দেওয়ার স্বপ্ন যেন চিরতরে হারিয়ে গেলো লালমনিরহাটের শহীদ শাহিনুর আলমের বিএনপির কর্মী সভা অনুষ্ঠিত যতদিন নির্বাচন হবে না, ততদিন স্বাভাবিক অবস্থায় দেশে ফিরে আসবেনা-অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু আলু চাষ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন লালমনিরহাটের কৃষকেরা
আমার পরিবারের ৮জন করোনা আক্রান্ত : আমি এতিম হয়ে যাচ্ছি না তো- নিশাত রেদওয়ানা সেঁজুতি

আমার পরিবারের ৮জন করোনা আক্রান্ত : আমি এতিম হয়ে যাচ্ছি না তো- নিশাত রেদওয়ানা সেঁজুতি

আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতিতে এলো পবিত্র ঈদ উল আযহা। যখন সবাই ঈদের আনন্দ করছে তখন কেউ কেউ যুদ্ধ করছে মহামারী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর সাথে। তেমনই একজন লালমনিরহাটের তরুনী ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ লালমনিরহাট জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিশাত রেদওয়ানা সেঁজুতি। সে জানালো তার ঈদের অনূভুতি।

 

আমার মা অসুস্থ ছিলো বেশ কয়েকদিন থেকেই কিন্তু কখনোই আমাদের বুঝতে দেয়নি এতটা অসুস্থ। শুরু থেকেই পরিবারের সদস্যসহ সকল শুভাকাঙ্ক্ষীরাই বারবার বলেছেন করোনার সময় যাতে আমরা বাসায়ই থাকি। আসলে দায়িত্ব আদর্শ বারবার আমাদের কড়া দিয়েছে।

 

আমার বাবা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ লালমনিরহাট জেলা শাখার সাধারণ সসম্পাদক ও লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. মতিয়ার রহমান করোনার শুরু থেকেই সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে নিরলস ভাবে। আমার মা বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক ও সমাজকর্মী ফেরদৌসী বেগম বিউটি তিনিও এর ব্যতিক্রম নয়। এরপর আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ লালমনিরহাট জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় মাঠে-ঘাটে ছুটে বেড়িয়েছি ওই সাধারণ মানুষের জন্য।

 

সবার মুখে হাসি ফোটাতে কখন যে ভয়ংকর করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এ আক্রান্ত হয়েছি পরিবারসহ আমি বুঝতেই পারিনি। মা যখন প্রচন্ড অসুস্থ মাথায় তখন বাজ ভেঙে পড়লো, অক্সিমিটার মেশিনে দেখি মা এর অক্সিজেন সিচুয়েশন কম। তারপর হাসপাতাল-ক্লিনিক করতে করতে করোনা পজিটিভ। মাটি সরে যাচ্ছিলো আমার পায়ের নিচ থেকে, দিন যত যাচ্ছে মা এর অবস্থা ততই খারাপ এরদিকে যাচ্ছে এরপর তাকে রংপুরে আইসোলেশনে রেখে আমরা সময় গুণছি। এরকম করতে করতেই বাবাসহ পরিবারের আরও ৪জনের পজিটিভ। তখন মনে হচ্ছিলো সব বুঝি আমার শেষ। আমি এতিম হয়ে যাচ্ছিনা তো। সাথে সাথেই বাবাকেও রংপুরে পাঠানো হলো। ২দিন পর ঈদ। এই প্রথম আমার জীবনে ঈদ বলতে কিছু নেই।

 

ঈদের আগের দিন রেজাল্টে আমিসহ আমার পরিবারের আরও ৮জন পজিটিভ৷ এবার আর অবাক হইনি। দিন গুণছিলাম কবে বাবা-মাকে দেখবো। জীবনের প্রথম ঈদ বাবা-মাকে ছাড়া। বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো। পাগলের মত হয়ে যাচ্ছি। ঈদের দিন উঠেই হালকা রান্না করে ভালোবাসাসহ পাঠিয়ে দিলাম রংপুরে বাবা-মার জন্য। যে বাসায় হাজার লোকের সমাগম থাকতো সেই বাসায় জনশূন্য ঈদ। হাহাকার করছিলো সব।

 

ঈদের পরের দিন সকালে উঠেই অনুভব করছি আমার প্রচন্ড গলা ব্যাথা। কাশি ১ঘন্টা যাবত থামছেনা, আমার অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছিলো তারপর আমিও চলে গেলাম রংপুরের কোভিড হাসপাতালে। দীর্ঘ অনেক দিন পর বাবা-মার সাথে দেখা অন্য এক জগতে। যেখানে মানুষ মারা গেলেও কান্নার শব্দ পাওয়া যায়না।

 

সবাই অসহায়ের মত করোনা পজিটিভ হয়ে আসছে ভর্তি হচ্ছে। ডাক্তার-নার্স সবাই পিপিই পরে কাজ করেই যাচ্ছে। সবকিছু অসহায় তবুও ভালো লাগছিলো এই ভেবে বাবা-মা পাশে আছে।

 

হাসপাতালে ৪দিন থাকার পর দ্বিতীয় পরীক্ষায় আমার করোনা নেগেটিভ আসলো এটা জানার পর আনন্দের থেকে কষ্ট হচ্ছিলো বেশি। আবার আমার বাবা-মাকে ছেড়ে আসতে হবে। মেয়েরা বরাবরই বাবা আদুরে হয় আমিও এর ব্যতিক্রম নই। আমার বাবা আমার পৃথিবী। করোনা নেগেটিভ আসায় হাসপাতাল থেকে আমাকে ছাড়পত্র দিলো।বুক ফেটে কান্না আসছে। আসার সময় অনেক কেদেছি। সৃষ্টিকর্তা এ রকম কষ্ট যেনো আর কাউকে না দেয়।

 

এখন দিন গুনছি, সময় দেখছি বারবার বাবা-মা ফিরে আসার প্রতীক্ষায়।সময়টাও বড্ড বেমানান, স্বার্থপর কাটতেই চায়না। এ যুদ্ধ কবে শেষ হবে জানিনা। পরিবারসহ যখন জিতবো তখনই মনের সব রং ফিরে আসবে। আমি ও আমার পরিবার দোয়াপ্রার্থী সকলের কাছে।

 

পরিবারকে কাছে পেতে এখন দিনগুনছে তরুনী নিশাত রেদওয়ানা সেঁজুতি। করোনাকালীন একাধিক পরিবারের পাশে দাঁড়ানো পরিবারটিই এখন যুদ্ধ করছে মহামারী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর সাথে।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone