মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ ও হেলাল হোসেন কবির: স্ত্রীর পরকীয়ার বলি হলেন মাইক্রোবাস চালক স্বামী বেলাল হোসেন (২৯)। হত্যার অভিযোগে নববধূ স্ত্রী লাবনী বেগম (২১) কে আটকের ৩দিন পর তার দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে তারই দুলাভাই আলমগীর হোসেন (৩০) কে গ্রেফতার করেছে আদিতমারী থানা পুলিশ।
গতকাল সোমবার ৩ আগস্ট রাতে লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আলমগীর হোসেন পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন।
নববধূ লাবনী বেগম লালমনিরহাট জেলা সদর উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নের বৈরাগিকামার গ্রামের বাসিন্দা। আর নিহত বেলাল হোসেন লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের হাড়ীভাঙ্গা গ্রামের মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের পুত্র। পেশায় বেলাল হোসেন মাইক্রোবাসের চালক ছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের গত ২৪ জুন লাবনী বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় মাইক্রোবাস চালক বেলাল হোসেনের। বিয়ের এক মাস না পেরুতেই গত ২৫ জুলাই বেলাল হোসেন নিখোঁজ হন।
এরপর ২৭ জুলাই আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের পাঠানটারী গ্রামস্থ লালমনিরহাট হতে বুড়িমারী গামী পাকা রাস্তার একটি পাট ক্ষেতে পানিতে ভাসমান অবস্থায় বেলাল হোসেনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে আদিতমারী থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের মাতা জরিনা বেগম বাদী হয়ে আদিতমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ২৯ ধারা ৩০/২০১/৩৪ তারিখ ২৮/০৭/২০২০।
মামলার পর পুলিশ নিহত মাইক্রোবাস চালক বেলাল হোসেনের স্ত্রী লাবনী বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে আদিতমারী থানায় নিয়ে আসে। পরে তারই দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের মূল আসামী লাবনী বেগমের দুলাভাই আলমগীর হোসেনকে গত সোমবার ৩ আগস্ট রাতে লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম জানান, শুক্রবার নিহতের স্ত্রী লাবনী বেগমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। লাবনী বেগম স্বীকার করেন, বিয়ের আগে থেকেই তার দুলাভাইয়ের সঙ্গে অবৈধ দৈহিক সম্পর্ক ছিল। বেলাল হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হওয়ায় দুলাভাই আলমগীর হোসেন ক্ষুব্ধ হয়ে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটায়। গ্রেফতার আলমগীর হোসনকে নিয়ে গত সোমবার ৩ আগস্ট রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলের অদূরে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করেছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি-না সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে আজ মঙ্গলবার ৪ আগস্ট লালমনিরহাট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটি প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বিপিএম, পিপিএমসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।