দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে হেমন্তের বিদায়লগ্নে জেঁকে বসছে শীতের দাপট। রেকর্ড হচ্ছে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) ভোর ৬টায় ১৫দশমিক ৪ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হওয়ার তথ্যটি জানিয়েছেন রাজারহাট আবহাওয়া অফিস। এ জেলা হিমালয়ের অনেকটা কাছাকাছি হওয়ায় তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি ঘন কুয়াশা এবং হিমশীতল বাতাসের প্রবাহ বাড়িয়ে দিচ্ছে শীতের তীব্রতা।
স্থানীয়রা জানান, দিন দিন কুয়াশা ও শীতের মাত্রা অনুভূত হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকেই উত্তরের ঠান্ডা বাতাসে শীত লাগতে শুরু করেছে। শীতের গরম কাপড় পরতে হয়েছে। রাতে টিনের চালে টিপটিপ করে শিশির পড়তে শোনা যায়। সন্ধ্যা থেকে এখন গায়ে কম্বল ও কাঁথা নিতে হচ্ছে। এ জেলায় অন্যান্য জেলার আগেই শীতের আগমন ঘটে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত শীতের দাপট বেশি হয়ে থাকে।
সকালে বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, ঘন কুয়াশায় সকাল থেকেই কর্মব্যস্ততায় জড়িয়ে বিভিন্ন শ্রমজীবী মানুষকে। দিনমজুর, ভ্যান চালকরা কাজে বেরিয়েছে। ধান কাটা ও মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক কৃষাণীরা।
লালমনিরহাট সদর এলাকার বড়বাড়ী ইউনিয়নের
ভ্যান চালক রেজু মিয়া জানায়, অভাবের সংসারে টাকা পয়সা ছাড়া শান্তি নাই। তাই নিজের জীবিকার তাগিদে ভোরেই ভ্যান নিয়ে বের হতে হয়েছে। আজ আগের থেকে অনেক বেশি ঠান্ডা পড়ে গেছে। ঠান্ডার মধ্যে অনেকেই ভ্যানে চড়তে চায় না। তবুও বের হয়েছি।
একই এলাকার দিনমজুর উর্মির আলী জানান, কয়েকদিন ধরেই কুয়াশা ও শীতের পরিমাণ বেশি মনে হচ্ছে। বিশেষ করে দুইদিন ধরে সকালে ও রাতে ঠান্ডা বেশি লাগে। এমন ঠান্ডা শুরু হলে কয়েকদিনের মধ্যে সকাল সকাল হয়তো কাজে যাওয়া সম্ভব হবে না।
স্থানীয় মোহাম্মদ আলী বলেন, আগের থেকে অনেক বেশি ঠান্ডা পড়েছে। আমাদের মতো বয়স্কদের জন্য শীত অনেক কষ্টের। দিনের বেলা গরম থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে ঠান্ডা লাগতে শুরু করে। শীতের কাপড় বের করতে হয়েছে। রাত বাড়তে থাকলে শীতও বাড়তে থাকে। রাতে কম্বল কিংবা মোটা কাঁথা নিতে হয়।
এদিকে রাতে ঠান্ডা ও দিনে গরম হওয়ায় বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধি। প্রায় ঘরে ঘরে সর্দি, কাশি ও জ্বর হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বাড়তে শুরু করেছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে রোগীরা।
লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (উপপরিচালক সমমান) ডাঃ মোঃ আব্দুল মোকাদ্দেম জানান, হাসপাতালে কয়েকদিন থেকে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা বাড়তেছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি রোগীদের সেবা দিতে।