সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এর এলাকায় এইচএসসি পরীক্ষায় এবার ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি।
প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার গন্ধমরুয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, নামুড়ী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, কালীগঞ্জ উপজেলার সোনারহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, শিয়াল খোওয়া কলেজ, দুহুলী এস.সি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এবং কাকিনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে জানা গেছে, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধিনে অংশ নেয়া এইচএসসি পরীক্ষায় লালমনিরহাটের আদিতমারী ও কালীগঞ্জ এই দুই উপজেলার ৬টি প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি। সব প্রতিষ্ঠানই উচ্চ মাধ্যমিকের সাথে সংযুক্ত কলেজ। যার মধ্যে গন্ধমরুয়া উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ থেকে চলতি বছর ৮জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কেউ পাস করতে পারেনি। নামুড়ী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে মাত্র একজন পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েও সেই শিক্ষার্থীও ফেল করেছে।
শিয়ালখোয়া কলেজ থেকে ৩জন অংশ নিয়ে কেউ পাস করতে পারেনি। সোনারহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে ৩জনের সকলেই ফেল করেছে। দুহুলী এসসি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এবং কাকিনা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের একমাত্র পরীক্ষার্থীরাও ফেল করেছে। নামুড়ী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজটি প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ এক যুগেও কেউ পাস করতে পারেনি।
এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় লালমনিরহাটের কেউ পাস না করা ৬টি প্রতিষ্ঠানই লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী কালীগঞ্জ) আসনে অবস্থিত। যে আসনে টানা দুই বার মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। মন্ত্রীর ক্ষমতায় এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও শিক্ষার মান ছিল একেবারেই নিম্নমুখি। প্রায় সকল প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী শিক্ষক ছিলেন মন্ত্রীর দলীয় এবং কাছের মানুষ। বিধায় ক্লাশ না করেও নিয়মিত বেতন ভাতা ভোগ করেছেন। এসব শিক্ষক প্রতিষ্ঠানে না গেলেও মন্ত্রীর বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতেন বলে অভিভাবকদের অভিযোগ।
মোশারফ হোসেন নামে একজন অভিভাবক বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি তাদের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা নুরুজ্জামান মন্ত্রীর চামচা ছিলেন। কলেজে না গেলেও মন্ত্রীর বাড়ি নিয়মিত যেতেন তারা। যদি কেউ পাস না করে সে প্রতিষ্ঠান রেখে লাভ কি। ভর্তির সময় শিক্ষার্থী অভিভাবকদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ভর্তি করেন। পরে ক্লাশ নেয়ার কোন খবর নেই। পাঠদান না থাকলে শিক্ষার্থীরা পাস করবে কেমন করে। এমন নাম মাত্র প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।
দুই উপজেলার দায়িত্বে থাকা আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুর ই আলম সিদ্দিকী বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি। তাদের এমন ফলাফলের কারন অনুসন্ধান করে প্রতিকারের ব্যবস্থা নেয়া হবে। যাতে আগামী দিনে এমন হতাশাজনক ফলাফল দেখতে না হয়।