শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে মানব পাচার প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কর্মশালা অনুষ্ঠিত লালমনিরহাট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে নির্বাচিত হলেন যাঁরা! সার সিন্ডিকেট হোতারা ধোঁয়া ছোঁয়ার বাহিরে কেন লালমনিরহাটে তামাকের বিষে কমছে জমির ঊর্বরতা; বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি লালমনিরহাটে জেন্ডার-সংবেদনশীল দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসকরণ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিযোজন বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে আত্মনির্ভরশীল দল এবং ইউডিএমসি এর মধ্যে অ্যাডভোকেসি এবং লবিং মিটিং অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত পাটগ্রামে শহীদ জিয়া স্মৃতি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট অনুষ্ঠিত গণতন্ত্র আমাদের হাতের নাগালে নাই-লালমনিরহাটে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় লালমনিরহাটে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ও ঔষধ সেবা অর্ধেক মূল্যে হত দরিদ্রদের ছানি অপারেশন অরবিট চক্ষু হাসপাতালে
লালমনিরহাটে বন্যায় কর্মহীন নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ; সেই সাথে গোখাদ্যের তীব্র সংকট!

লালমনিরহাটে বন্যায় কর্মহীন নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ; সেই সাথে গোখাদ্যের তীব্র সংকট!

টানা কয়েক দফায় লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল এবং তিস্তা, ধরলা ও রত্নাই নদীর তীরবর্তী এলাকা বন্যা আক্রান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৩৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আবারও কাঁচা-পাকা সড়ক, স্কুল-কলেজ, মাঠ-ঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে।

 

লালমনিরহাটের আদিতমারী ও হাতীবান্ধা উপজেলায় ৪টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ২১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

 

লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলায় ৩টি ও আদিতমারী উপজেলায় ১টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সম্প্রতি বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

অপরদিকে লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলায় ১২টি, আদিতমারীতে ৮টি ও হাতীবান্ধা উপজেলায় ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

এছাড়াও উপর্যুপরি বন্যায় ক্ষতির তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতরও হচ্ছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে দিনমজুরসহ খেটে-খাওয়া নিম্ন আয়ের হাজার হাজার মানুষ। কয়েক ধাপে বন্যায় রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি, শাক-সবজি ও আমন ধান আবাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এই ক্ষতির পরিমাণ এখন ও নির্ধারণ করা হয়নি। গেল কয়েক ধাপের বন্যার ক্ষয়-ক্ষতি পুষিয়ে উঠার আগেই নতুন করে আবার বন্যা দেখা দিয়েছে। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে কেউ ত্রাণ পায় আর কেউ পাচ্ছে না এমন তথ্যচিত্র দীর্ঘ হচ্ছে।

 

এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৮-১০টি চর ও পাশ্ববর্তী কালীগঞ্জ, আদিতমারী উপজেলার ১০-১৫টি চর এলাকায় পানি উঠতে পারে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

 

তিস্তা নদীর অববাহিকায় লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের নয়ারহাট, সরদারপাড়া, মুন্সিপাড়া, মহিনপাড়া, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের দোয়ানী, ছয়নী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের হলদিবাড়ি, সিংগীমারি ইউনিয়নের ধুবনি, সিন্ধুরনা ইউনিয়নের চর সিন্ধুরনা, ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের উত্তর ডাউয়াবাড়ি, দক্ষিণ ডাউয়াবাড়ি, কিসামত নোহালি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের শৈইলমারী, চর বৈরাতী, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের গোবর্ধন, দক্ষিণ বালাপাড়া এবং লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কালমাটি, রাজপুর ইউনিয়নের, ঘনাইঘাট, চ্যাংড়া, কিসামত চেনাইতলী, গোকুন্ডা ইউনিয়নের, চর গোকুন্ডার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে বলে জানা যায়।

 

এদিকে বন্যা আসে, বন্যা যায়। অতীতে ও অনেক বন্যা এসেছে। বন্যা শেষে প্রকৃতি স্বাভাবিক হয়। নদ-নদী, খাল-বিল, অনাবাদি ক্ষেতে আগাছা, ঘাস, তৃণলতা জন্মায়। কচুরিপানার বিপুল সম্ভার থাকে পুকুর, খাল, নদে। সময়ের সাথে সাথে প্রকৃতি ঘুরে দাঁড়ায় কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। ধাপে ধাপে বন্যায় সব কিছু যেন বিরাণ করে দিয়েছে। এখনও বন্যা চলমান রয়েছে।

 

সমতল ও জলাবরণ জমি, কাঁচা সড়ক, খাল, পুকুর, বিল, কোথাও নেই ঘাস, লতাগুল্ম ও কচুরিপানা। আধুনিকতার যাঁতাকলে ধানের মৌসুমে গৃহস্থরা এখন আর আগের মত যত্ন করে খড়কুটো সংগ্রহে রাখেন না। গরু লালন পালন এখন কৃষকের পেশায় মানায় না এমন অঘোষিত আভিজাত্যপূর্ণ বাঁচার তাগিদ কৃষকের মাঝে। আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি সময় বাঁচিয়ে দেওয়ায় ফুরসত পেয়ে কৃষক এখন স্বস্তিতে স্বাবলম্বী। গরু, মহিষের উৎপাদন নিয়ে অর্থনৈতিক চিন্তা এখন খামারিরা করেন। গাঁও গ্রামের যে দু-চার কৃষক এখনও গরু, মহিষের লালন-পালন করেন তারা এখনও প্রাকৃতিক গো-খাবারের উৎসের উপর নির্ভরশীল। প্রকৃতি বিরূপ হলে গোখাদ্যের সংকট মোকাবিলায় কৃষকদের হিমশিম খেতে হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। বর্তমানে বন্যা থাকাকালীন সময়ে উত্তর সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট এলাকার কৃষকেরা চুড়ান্ত সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন।

 

আবাদি, অনাবাদি জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এবং ধীর গতিতে বন্যার পানি কমার কারণে পচে গেছে ঘাস, ভেসে গেছে কচুরিপানা, নষ্ট হয়েছে তৃণলতা। সঞ্চিত খড়কুটো ও ধানের তোস দিয়ে সময় কাটিয়ে দেওয়া দুঃস্বপ্ন কৃষকের কাছে এমনটি জানা গেছে সরেজমিনে কৃষকদের সাথে কথা বলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে জমিতে ঘাস উৎপাদন না হওয়া পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান হবেনা এমনটাই জানিয়েছে কৃষকেরা। অন্য স্থান থেকে অধিক দামে গোখাদ্য খড় ক্রয় করতে হচ্ছে। এক-একটি পোয়ালের আঁটি ১০ থেকে ১২টাকা দরে কিনতে হচ্ছে।

 

এচাড়াও গরু লালন পালনকারী গৃহস্থরা দূর-দূরান্ত থেকে যতসামান্য কচুরিপানা ও লতাগুল্ম সংগ্রহ করে কোন রকম গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষের জীবন রক্ষা করতে দেখা গেছে। এতে ভেঙে যাচ্ছে পশু স্বাস্থ্য। এছাড়া মৌসুমি রোগবালাই এর নিরাময়ে চিন্তিত কৃষক কূল গরু-মহিষ নিয়ে।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone