মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ, লালমনিরহাট:
লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়ন ও ২টি (লালমনিরহাট, পাটগ্রাম) পৌরসভার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র স্থাপনের নামে সরকারি টাকা হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে। কোথাও বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র স্থাপনের নামে স্লিপ (স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্ল্যাণ) নামের স্কুলের ফান্ড থেকে ১৬-৩৩হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। দ্বিগুণের বেশি দামে এই যন্ত্র ক্রয় করা হয়। কোথাও ২মাস আগে যন্ত্র স্থাপন করা হলেও তার ব্যবহার সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষিকারা কিছুই জানেন না। যন্ত্রটি সার্ভারের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়নি। যন্ত্রটির কার্যক্রম না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারছে না ঊর্ধ্বতন অফিস। বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের মেশিন কেনার কথা থাকলেও তা উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের মতামতের মূল্য দেওয়া হয়নি। যন্ত্রের মেয়াদ ১বছর থেকে দেড়বছর। বিদ্যালয়ের দেয়ালে ঝুলে তার মেয়াদ ২মাস শেষ হয়ে গেছে। অনেক যন্ত্র নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় সূত্রমতে, লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়ন ও ২টি (লালমনিরহাট, পাটগ্রাম) পৌরসভার ৭শত ৬৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১শত ৪৯টি, ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র ক্রয়কৃত বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১শত ১৮টি, ইনস্টলকৃত ও ব্যবহার করছে এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২৪টি। আদিতমারী উপজেলার মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১শত ২৬টি, ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র ক্রয়কৃত বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১শত ১৬টি, ইনস্টলকৃত ও ব্যবহার করছে এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা নেই। কালীগঞ্জ উপজেলার মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১শত ৬৫টি, ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র ক্রয়কৃত বিদ্যালয়ের সংখ্যা নেই, ইনস্টলকৃত ও ব্যবহার করছে এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা নেই। হাতীবান্ধা উপজেলার মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১শত ৭৮টি, ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র ক্রয়কৃত বিদ্যালয়ের সংখ্যা নেই, ইনস্টলকৃত ও ব্যবহার করছে এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা নেই। পাটগ্রাম উপজেলার মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১শত ৪৫টি, ডিজিটাল হাজিরা যন্ত্র ক্রয়কৃত বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৬টি, ইনস্টলকৃত ও ব্যবহারর করছে এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা নেই। অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী উপজেলায় যন্ত্র ক্রয় বিষয়ে। এদিকে কালীগঞ্জ উপজেলায় হাজিরা মেশিন ক্রয়ের টাকা সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের স্লিপ হিসাবে জমা আছে। অপরদিকে হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম উপজেলার হাজিরা মেশিন ক্রয়ের টাকা কি হলো? এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা কেউ মুখ খুলতে চান না। তারা বলেন, সব বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি জানে।