লালমনিরহাটের ধরলা নদীর পানি ৪০সে.মি উপরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
রোববার (৭ জুলাই) দুপুর ৩টা লালমনিরহাট বন্যার তথ্য কেন্দ্র হতে এ জানানো হয়েছে।
এ পানি বৃদ্ধির ফলে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট, কুলাঘাট, বড়বাড়ীসহ পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলা শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের প্রায় ২০হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও লালমনিরহাটের মোগলহাট ইউনিয়নের চর ফলিমারির উপর দিয়ে কমর পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে পানি সমতল ৩১.২৭মিটার (বিপদসীমা ৩০.৮৭মিটার) যা বিপদসীমার ৪০সেন্টিমিটার উপরে।
ধরলা নদীর পাটগ্রাম পয়েন্ট- পানি সমতল ৫৭.৭২মিটার (বিপদসীমা= ৬০.৩৫মিটার) যা বিপদসীমার ২৬৩সে.মি নিচে।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধরলা নদী পাড়ে হু হু করে পানি বেড়ই চলছে। হঠাৎ এ পানি বৃদ্ধি পাওয়ার লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার দূগার্পুর ও লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট, কুলাঘাট, বড়বাড়ী এবং কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ডুবে গেছে রাস্তা-ঘাটসহ সবজির খেতসহ বিভিন্ন উঠতি ফসল।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)র নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, ধরলা পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কিছু বাঁধ ও রাস্তা ঘাট ঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি।
অপরদিকে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্ট- পানির সমতল ৫১.৯৬মিটার (বিপদসীমা= ৫২.১৫মিটার) যা বিপদসীমার ১৯সে.মি নিচে।
কাউনিয়া পয়েন্ট- পানির সমতল ২৯.১৭ মিটার (বিপদসীমা= ২৯.৩১মিটার) যা বিপদসীমার ১৪ সে.মি নিচে।
লালমনিরহাটে গতকাল সকাল ৯টা হতে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতঃ ১মিলিমিটার।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বাপাউবো পানি ভবন ঢাকা কর্তৃক বন্যা সতর্কীকরণ বার্তায় উত্তরাঞ্চল রোববার (৭ জুলা) ব্রহ্মপুত্র নদের পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ঘণ্টা অবধি ধীর গতিতে হ্রাস পেতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য অনুযায়ী, দেশের উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে আগামী ২৪ঘন্টায় মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।
আগামী ২৪ঘন্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল সময় বিশেষে বৃদ্ধি পেতে পারে। এর ফলে তিস্তা নদীর পানি সমতল কতিপয় পয়েন্টে স্বল্পমেয়াদে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং ধরলা ও দুধকুমার নদী সংলগ্ন কুড়িগ্রাম জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য অবনতি হতে পারে।
আগামী ২৪ঘন্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের যমুনাশ্বরী, করতোয়া, বাঙ্গালী, আপার করতোয়া, পুর্নভবা, টাঙ্গন, ইছামতি, যমুনা, আত্রাই, মহানন্দা এবং ছোট যমুনা নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে বৃদ্ধি পেতে পারে।
আগামী ২৪ঘন্টায় আত্রাই নদীর পানি সমতল বাঘাবাড়ী পয়েন্টে বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ঘাঘট নদীর পানি সমতল গাইবান্ধা পয়েন্টে হ্রাস পেতে পারে। এর ফলে সিরাজগঞ্জ জেলার আত্রাই নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে এবং গাইবান্ধা জেলার ঘাঘট নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
আগামী ৭২ঘন্টায় কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যার পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
উত্তরাঞ্চলের বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত স্টেশন: পাটেশ্বরী (দুধকুমার) +৫১, কুড়িগ্রাম (ধরলা) +৩১, গাইবান্ধা (ঘাঘট) +২৬, নুনখাওয়া (ব্রহ্মপুত্র) +৫৩, হাতিয়া (ব্রহ্মপুত্র) +৫৬, চিলমারী (ব্রহ্মপুত্র) +৬৭, ফুলছড়ি (যমুনা) +৭৬, বাহাদুরাবাদ (যমুনা) +৮৬, সাঘাটা (যমুনা) +৮২, সারিয়াকান্দি (যমুনা) +৫৬, কাজিপুর (যমুনা) +৫৫, জগন্নাথগঞ্জ (যমুনা) +১১৮, সিরাজগঞ্জ (যমুনা) +৬১, পোড়াবাড়ী (যমুনা) +৩২, বাঘাবাড়ি (আত্রাই) +০১।
গত ২৪ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত (মি.মি.): পঞ্চগড় ১১০ এবং বদরগঞ্জ (রংপুর) ৫৩।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সংশ্লিষ্ট উজানে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত (মি.মি.): জলপাইগুড়ি (পশ্চিম বঙ্গ) ১৬৭, শিলিগুড়ি (পশ্চিম বঙ্গ) ১০৪ এবং দার্জিলিং (পশ্চিম বঙ্গ) ২০।