গ্রীষ্মে ফুটে জারুল ফুল। লালমনিরহাটের পথের ধারে জারুল গাছে গাছে ফুটেছে এ ফুল। লালমনিরহাটের স্টেশন রোড থেকে লালমনিরহাট সরকারি কলেজ ও কুলাঘাট বাজার থেকে বড়বাড়ীর দিকে যেতে যেতে চোখে পড়বে জারুল ফুলের গাছ। এসব গাছেই ফুটেছে অসম্ভব সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর এ ফুলটি। যা প্রকৃতি প্রেমিদের নজর কেরেছে।
গ্রীষ্মের প্রচন্ড গরমে চোখের আরামে শান্তির প্রতীক এই জারুল ফুল। মুগ্ধ চোখে চেয়ে থাকে ফুল প্রেমিরা। গাঢ় বেগুনি রঙ্গের জারুল ফুল চোখের ইশারায় আর আকাশের গায়ে ঢেউ খেলে বাতাসের দোলে।
পাপড়ির নমনীয় কোমলতা, দৃষ্টিনন্দন বর্ণচ্ছটা নিয়ে প্রকৃতিকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তোলে জারুল ফুল। ফুলটির ইংরেজি নাম: Giant crape-myrtle. পরিবার: Lythraceae. বৈজ্ঞানিক নাম: Lagerstroemia speciosa।
জারুল গাছের পাতা সবুজ, পুরু ও বেশ বড়। গাছের শাখা-প্রশাখা ও কাণ্ড শক্তমানের, শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে দণ্ড বোঁটায় অসংখ্য ফুল ফোটে। বোঁটার নিচ থেকে প্রথম ফুল ফোটা শুরু হয়ে বোঁটার সামনের দিকে ধীরে ধীরে ফুল ফোটে।
জারুল গাছে এপ্রিল থেকে জুন মাসে ফুল আসে। ফল পরিপক্ব হয় অক্টোবর থেকে জানুয়ারী মাসের মধ্যে। জারুল গাছ যখন ফুলে ফুলে ভরে যায় তখন চারদিক ঘ্রাণে মোহিত হয় না বটে, দৃষ্টিনন্দন শোভায় সবারই চোখ আটকে যায়। আকৃতি ভিন্ন হলেও জারুল ফুলের রং সাধারণত কচুরীপানা ফুলের মতো বেগুনী আর সাদার মিশেল।
জারুল ভারতীয় উপমহাদেশের নিজস্ব বৃক্ষ। বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও চীন, মালয়েশিয়া প্রভৃতি অঞ্চলে জারুলের সন্ধান মেলে। নিম্নাঞ্চলের জলাভূমিতে এটি ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে, তবে শুকনো এলাকাতেও এদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হয় না। মাঝারি আকৃতির এই বৃক্ষটি শাখা-প্রশাখাময়। এর লম্বাটে পাতাগুলো পত্রদণ্ডের বিপরীতে সাজানো থাকে। এই পাতাঝরা বৃক্ষ শীতকালে পত্রশূণ্য অবস্থায় থাকে। বসন্তে নতুন গাঢ় সবুজ পাতা গজায়।
ফুল শেষে গাছে বীজ হয়, বীজ দেখতে গোলাকার ও বীজের মাধ্যমে বংশবিস্তার করা হয়। জারুল ভারতীয় উপমহাদেশের নিজস্ব বৃক্ষ। বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও চীন, মালয়েশিয়া প্রভৃতি অঞ্চলে জারুলের দেখা মেলে। নিম্নাঞ্চলের জলাভূমিতে এটি ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে, তবে শুকনো এলাকাতেও এদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হয় না। জারুল কাঠ লালচে রঙের, অত্যন্ত শক্ত ও মূল্যবান। ঘরের কড়ি-বরগা, লাঙল, আসবাবপত্র ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। জারুল গাছের ভেষজ গুণও রয়েছে। এর বীজ ও পাতা ডায়াবেটিস রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া জ্বর, অনিদ্রা, কাশি ও অজীর্ণতায় জারুল উপকারী।
লালমনিরহাটের স্টেশন রোড থেকে লালমনিরহাট সরকারি কলেজ ও কুলাঘাট বাজার থেকে বড়বাড়ীর সড়কের পাশে রয়েছে এ জারুল ফুলের গাছ।
ফুল প্রেমি এস এম হাসান আলী বলেন, জারুল ফুল দেখতে অসম্ভব সুন্দর। পথচারীদের এ ফুল দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। ফুল প্রেমি পথচারীরা মুগ্ধ হবে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল ইসলাম খন্দকার বলেন, নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও টিকে থাকে জারুল গাছ। রাস্তার পাশে রোপন করা হয় বলে এই গাছ ছায়া দেয় এবং গ্রীষ্মকালে গাঢ় বেগুনি ফুলের রঙ্গে প্রকৃতির মাঝে সৌন্দর্য ছড়িয়ে দেয়।