আলোর মনি ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট: লালমনিরহাট জেলায় তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানের পাহাড়ী ঢল ও টানা বর্ষনের কারণে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি ৫ম দফায় বৃদ্ধি পেয়েছে। নদী ২টি রুদ্ধমূর্তি ধারণ করেছে। তিস্তা ও ধরলা নদীর প্রায় ৫০টি চর ও দ্বীপ চরে প্রায় ৩০হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনো খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। কয়েক দফায় পানি উঠায় তারা হতাশা ও নিদারুন কষ্টে পড়েছে বানভাসি মানুষগুলী। তিস্তা নদীর পানি ৩০সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারেজের ফ্লাড বাইপাস সড়কটি হুমকির মূখে পড়েছে। তিস্তা ব্যারেজ বাঁচাতে যেকোন মূহুর্তে বাইপাস সড়কটি ভেঙ্গে দিয়ে পানি প্রত্যাহার করা হতে পারে।
জানা গেছে, বাংলাদেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২দশমিক ৯০সেন্টিমিটর। যা (স্বাভাবিক ৫২দশমিক ৬০সেন্টিমিটার) বিপদসীমার ৩০সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে তিস্তা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষরা গেল দুই সপ্তাহে তৃতীয় দফায় বন্যার কবলে পড়েছে। শুক্রবার ১০ জুলাই ৪র্থ দফায় ও রবিবার ১২ জুলাই ৫ম দফায় তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৩০সেন্টিমিটার পেরুলে লালমনিরহাট জেলায় বন্যা স্থায়ী রুপ নিয়েছে। তিস্তা ও ধরলা খুবেই খরস্রোতা নদী। কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙ্গণ। ইতোমধ্যে ৫ম দফায় কয়েক দিনে প্রায় ৩শতাধিক পরিবারেরর ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীণ হয়ে গেছে। তিস্তা ব্যারেজের ৪৪মেইন গেট ও ৯টি ক্যানেলের গেট খুলে পানি প্রত্যাহার করা হচ্ছে। তবুও তিস্তা ব্যারেজ পানির শক্তিশালী তোড়ে থর থর করে কাঁপছে। সর্তক অবস্থায় রাখা হয়েছে বাইপাস সড়কটি। পানির তোড় একটু বেশী হলে ভাটিতে সর্তকতা জারি করে বাইপাস সড়কটি কেটে দেয়া হতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার নুরুল ইসলাম জানান, শনিবার ১১ জুলাই রাতে বিপদ সীমার ৩৮সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ছিল। এখন রবিবার ৩০সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিস্তা ও ধরলা নদীর তীরবর্তী ৫টি উপজেলার প্রায় ৩০হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, দূর্গাপুর। লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, মোগলহাট, কুলাঘাট, বড়বাড়ী ইউনিয়নের তিস্তা ও ধরলা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৩০হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, উজানের পাহাড়ী ঢল ও ভারি বৃষ্টিপাতে তিস্তার পানি প্রবাহ রবিবার ৫ম দফায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
সর্বশেষ তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৩সেন্টিমিটার উপরে। যা ৫৩.১৩মিটার, স্বাভাবিক ৫২.৬০ মিটার। ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৫১সেন্টিমিটার উপরে। যা ৩১.৬০মিটার, স্বাভাবিক ৩১.০৯ মিটারে দাড়িয়ে মর্মে জানা গেছে।