লালমনিরহাটঃ উত্তাল ধরলা নদীর প্রবল স্রোত। বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পরিদর্শনে এসেছেন লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আঃ কাদের, শাখা কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম। ছবিঃ সংগৃহীত।
মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ ও হেলাল হোসেন কবির: লাগাতার ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে লালমনিরহাট জেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা ও ধরলাসহ প্রায় সকল নদ-নদীর পানি হু-হু করে বৃদ্ধি পেয়ে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
এদিকে লালমনিরহাট জেলার নদ-নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তিস্তার নদীর পর এবার ধরলা নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বাড়তে শুরু করছে।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাটের শিমুলবাড়ি পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে আতংকিত হয়ে পড়ছে লালমনিরহাট শহর ও শহরতলীর লোকজন। ধরলা নদীর এমন অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধিতে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট, কুলাঘাট ও বড়বাড়ী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে।
অপরদিকে ভারতের গজালডোবা ব্যারেজ থেকে ধেয়ে আসা পানি নিয়ন্ত্রণ করতে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে অবস্থিত দেশের সর্ব বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।
আজ রবিবার ১২ জুলাই গভীর রাতে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩৭সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিকলে ৩টায় তা কমে ২৫সেন্টিমিটারে দাঁড়িয়েছে। দিনশেষে তা আরও বাড়তে পারে বলে আশংকা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাগণ। ফলে ব্যারেজের ভাটিতে থাকা লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও লালমনিরহাট সদর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের প্রায় ২৮হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
বানভাসী এসব মানুষের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। গত ৩দিনে এসব এলাকায় সরকারি পর্যায়ে তেমন কোন সাহায্য-সহযোগিতার তৎপরতা চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ বানভাসী মানুষজনের।
এসব মানুষের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার কারণে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার অবনতি হয়েছে।
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের হামিজন নেছা (৫৮) বলেন, বাহে গেল বানোত ১০কেজি চাল পাইছনুং আর এবার কেনবা এলাও কায়ো খবরও নিলে না। হামার যে কি হইবে, আল্লায় জানে।
গোবরধন চরের আজিজুল ইসলাম (৬৫) বলেন, ৩দিন থাকি পানিবন্দি হয়া আছি এলাও কায়ও খবরও নিলে না।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, পানি আস্তে-আস্তে নামতে শুরু করেছে। পানিবন্দি এলাকার মানুষের জন্য ১শত ২০মেট্রিক টন জিআর চাল ও নগদ ২লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।