:: মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ :: লালমনিরহাটে আশ্বিনের শুরুতে যে মুহূর্তে নিম্ন, মধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষের নাকাল অবস্থা, চালের দাম যে সময়ে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ঠিক সে মুহূর্তে আমনের আগাম হাইব্রিড জাতের ধান কাটা শুরু হওয়ায় কৃষকের চোখে মুখে হাসি ফুটেছে। ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
জানা যায়, আগাম জাতের ধান বাজারে চাহিদাও বেশি। আগাম জাতের আমন ধান কেটে ওই জমিতে রবিশষ্য আলু, সরিষা চাষ করবেন এই লালমনিরহাট জেলার কৃষকেরা। এতেও একই জমিতে বছরে ৩-৪টি ফসল উৎপাদন করতে পারবেন কৃষক। এই ধান কৃষক পরিবারগুলোতে এনে দিয়েছে আনন্দ। সেই সঙ্গে আশ্বিন-কার্তিকের মঙ্গা’র প্রতিধ্বনিকে হটিয়ে দিতেও সক্ষম হয়েছে।
লালমনিরহাটের কোদালখাতা গ্রামে এই ধান কাটা মারাই শুরু হয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে ধান কাটা-মারাই এর দৃশ্য চোখে পড়ে।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে লালমনিরহাট জেলার ৪৫টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় প্রায় ৮০হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করা হয়। এর মধ্যে স্বর্ণা, হাইব্রিড, ব্রি-ধানসহ বেশ কয়েকটি জাতের আমন ধান রোপণ করা হয়েছে। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে অর্থাৎ মধ্য আষাঢ়ে লাগানো হয় এই ধান। মোট ১শত ১৩দিন পর কাটা শুরু হলো এই আগাম ধান। জমি তৈরী, সার, কীটনাশকসহ বিঘা প্রতি এ আবাদে খরচ পড়েছে ৮হাজার টাকা।
কোদালখাতা গ্রামের কৃষক নুরুজ্জামান বলেন, আমি এবারে আমার জমিতে ধানী গোল নামক ধান রোপণ করেছি। যা আশ্বিন মাসে কাটতে শুরু করেছি।
ফুলগাছ গ্রামের কৃষক মোঃ হযরত আলী বলেন, এ অঞ্চলে আশ্বিন-কার্তিক মাসে মঙ্গা বিরাজ করে এবং এ ২ মাস খেটে খাওয়া মানুষের হাতে কাজকর্ম থাকে না। কৃষি মজুররা এ সময়ে বেকার থাকায় অর্থ ও খাদ্যকষ্টে ভোগেন। কিন্তু আগাম হাইব্রিড জাতের ধান কাটা শুরু হওয়ায় এখানে আর মঙ্গার প্রভাব পড়ছে না। সংশ্লিষ্টদের অভাব দূরীভূত হবে।
ফুলগাছ ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল ইসলাম খন্দকার বলেন, আমরা আমাদের অবস্থান থেকে ধান চাষে কৃষকদের যথাসাধ্য পরামর্শ দেয়ার চেষ্টা করছি। যার ফলশ্রুতিতে আগাম জাতের হাইব্রিড ধান চাষে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।