দেশের সকল অঞ্চলে একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণা রয়েছে। জেলা হিসেবে উক্ত অঞ্চলের একটি লালমনিরহাটও দাবিদার। লালমনিরহাটে একটি মিনি বিসিক শিল্পনগরী রয়েছে। যার কোন উন্নতি নাই। তবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধ্যান-ধারণা অনুযায়ী অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলে এ এলাকার বেকার সমস্যা সমাধান হবে। এবং রপ্তানি পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে। উক্ত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য লালমনিরহাটে প্রয়োজনীয় ভূমিও রয়েছে। প্লাস্টিক, হার্ডওয়্যার, ইলেকট্রনিক, তৈজসপত্র ও রসায়ন ইত্যাদি শিল্প (ইপিজেড) এর ন্যায় স্থাপন করে এলাকার উন্নয়ন সম্ভব। এ বিষয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের হস্তক্ষেপ অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। যা হতে পারে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি উজ্জ্বল দৃষ্ঠান্ত ও মাইলফলক।
এদিকে গত ৫ অক্টোবর ২০১৯খ্রিস্টাব্দে ১৮, লালমনিরহাট-০৩ (লালমনিরহাট সদর) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ ইকোনোমিক জোন অথরিটি ঢাকার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীকে প্রেরিত লালমনিরহাট জেলায় ইকোনোমিক জোন স্থাপন ডি.ও পত্রে উল্লেখ করেছেন, লালমনিরহাট জেলার সংসদীয় আসন লালমনিরহাট-৩ (লালমনিরহাট সদর উপজেলা) আমার নির্বাচনী এলাকা। উক্ত সদর উপজেলার দুই দিক দিয়ে দুটি নদী প্রবাহমান। প্রায় প্রতি বৎসরই নদী ভাঙ্গনের কারণে অনেক লোক ঘর-বাড়ী ও জমিজমা হারিয়ে সর্বশান্ত হন। কর্মসংস্থানের অভাবে প্রচুর শিক্ষিত ও কর্মক্ষম লোক বেকার অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। দারিদ্র পীড়িত এলাকা হিসেবে এ জেলার পরিচিতি আছে। আমার নির্বাচনী এলাকাসহ পুরো জেলায় অনেক হালকা শিল্প-কারখানা আছে। এছাড়াও জেলাটি কৃষি পণ্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। সরকার লালমনিরহাট জেলায় একটি ইকোনোমিক জোন স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। সরকারের উদ্যোগটি বাস্তবায়িত হলে লালমনিরহাট জেলায় ঢাকা শহরের তুলনায় স্বল্প মূলে কাজে লাগিয়ে অর্থনীতির উন্নয়ন বেগবান করা সম্ভব। একই সঙ্গে প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্য ও কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপন হলে এ অর্থনৈতিক জোনটি জাতীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি ঐ এলাকার বেকার সমস্যাও কমে যাবে। ইতোমধ্যে আপনার দফতরের পত্র তারিখ ০৯ মে ২০১৯ নং ০৩.৭৫৯.১৪.০০.০০.২৩৩.২০১৮-১২২৭ মারফত জানতে পেরেছি কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের জামির বাড়ি মৌজার ১ নং খতিয়ানভুক্ত ১০১.৮২ একর জমিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য একটি প্রস্তাব জেলা প্রশাসক লালমনিরহাট হতে আপনার দফতর বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে (কপি সংযুক্ত)। উক্ত পরে আরো জানা গেলো অর্থনৈতিক অঞ্চলটি স্থাপনের প্রস্তাবিত ভূমির পরিমাণ স্বল্প। লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের তেলীপাড়া মৌজার পাকা রাস্তা সংলগ্ন নিম্নতফশিলে বর্ণিত বিমানবন্দর ও হেলিপ্যাড ১ কিঃমিঃ দুরত্বে। ৫৭০ একর জমি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য অধিগ্রহণ করা যেতে পারে। উক্ত জমি হতে রেল ষ্টেশন ১ কিঃমিঃ, মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন তক্ষশীল- মৌজা- নিজপাড়া পরিমাণ ১৫০ একর মৌজা- তেলীপাড়া পরিমাণ ১৫০ একর, মৌজা- সাতপাটকি পরিমাণ ১৫০ একর, মৌজা মকড়া চড়গাছ পরিমাণ ৭০ একর, মৌজা- কাশীপুর পরিমাণ ৫০ একর, মোট ৫৭০ একর লালমনিরহাটের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে রেলপথ, সড়ক পথ ও আকাশ পথ সবগুলিই বিদ্যমান আছে। লালমনিরহাটের অদূরেই রয়েছে সৈয়দপুর বিমান বন্দর। এছাড়াও লালমনিরহাট শহরে রয়েছে একটি বিশাল বিমান বন্দর। যেকোন সময় যাত্রী চাহিদার ভিত্তিতে সেটিও চালু হতে পারে। বিদ্যমান বিষয়টি বিবেচনা করে লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলায় ইকোনোমিক জোন স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করছি।
অপরদিকে উক্ত ডি.ও পত্রের প্রেক্ষিতে গত ২০ অক্টোবর ২০১৯খ্রিস্টাব্দে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (উপ সচিব) ব্যবস্থাপক (বিনিয়োগ উন্নয়ন) আবু হেনা মোঃ মুস্তাফা কামাল স্বাক্ষরিত লালমনিরহাট জেলা প্রশাসককে প্রেরিত লালমনিরহাট জেলায় ইকোনোমিক জোন প্রতিষ্ঠা পত্রে উল্লেখ করেছেন, লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলায় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের লক্ষ্যে উল্লিখিত ভূমির মালিকানাসহ দাগসূচী ও মৌজা ম্যাপে চিহ্নিত করে জরুরিভিত্তিতে বিস্তারিত তথ্যাদি প্রেরণ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
পরবর্তীতে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক বিস্তারিত তথ্যাদি প্রেরণ করেছে মর্মে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, চলতি ২০২৩খ্রিস্টাব্দের ১ আগস্ট সকাল ১০টায় লালমনিরহাটের মিশন মোড় গোল চত্ত্বরে অতিক্রম লালমনিরহাটের আয়োজনে লালমনিরহাটের মহেন্দ্রনগরে অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়নের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।