শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
গণতন্ত্র আমাদের হাতের নাগালে নাই-লালমনিরহাটে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় লালমনিরহাটে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ও ঔষধ সেবা অর্ধেক মূল্যে হত দরিদ্রদের ছানি অপারেশন অরবিট চক্ষু হাসপাতালে লালমনিরহাটে শীতের হরেক রকমের পিঠার দোকানের পসরা নিয়ে বসছেন বিক্রেতারা বিএনপির কর্মী সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত বাবা-মাকে একটা বাড়ি করে দেওয়ার স্বপ্ন যেন চিরতরে হারিয়ে গেলো লালমনিরহাটের শহীদ শাহিনুর আলমের বিএনপির কর্মী সভা অনুষ্ঠিত যতদিন নির্বাচন হবে না, ততদিন স্বাভাবিক অবস্থায় দেশে ফিরে আসবেনা-অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু আলু চাষ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন লালমনিরহাটের কৃষকেরা লালমনিরহাটে সরকার ফার্মেসী এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি (জিআর) চাল কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ
সংখ্যালঘু পরিবারের দোকান ঘর ভেঙ্গে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে

সংখ্যালঘু পরিবারের দোকান ঘর ভেঙ্গে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে

লালমনিরহাটে সংখ্যালঘু এক পরিবারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দোকান ঘর ভেঙ্গে নিয়ে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে মোকলেছার রহমান নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। জমিতে থাকা একটি টিনের চালা এবং ঘরে থাকা চেয়ার-টেবিলসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে দখলদাররা। এ ঘটনায় আদিতমারী থানায় অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভোগী সংখ্যালঘু ওই পরিবারটি, উল্টো দখলদাররা ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী হওয়ায় সংখ্যালঘু পরিবারটি বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
শুক্রবার বিকেলে লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের ভাদাই আদর্শ বাজারে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা তাদের জমি দখল ঠেকাতে গেলে প্রভাবশালী ক্ষমতাধর মোকলেছার রহমান ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দা, কুড়াল ও ছোড়া উচিয়ে হত্যা করার হুমকী দিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেয়।
জমির মালিক শ্রী ভূপতি ভূষন রায় (৪৫) সাংবাদিকদের জানান, দেশ স্বাধীনের পূর্বে স্থানীয় তারা মোহনের নিকট থেকে এক দাগে মোট ৭১শতক জমি ক্রয় করেন তার বাবা মহেশ্বর রায়। এর মধ্যে ৫৬শতক জমি তাদের দখলেই আছে। কিন্তু বাকি ১৪শতক জমি তারা কোনভাবেই আমাদের দিচ্ছে না। পরে ২০২১ সালে তিনি আদালতে একটি বাটোয়ারা মামলা দায়ের করলে তারা ৮শতক তাদের দখলে রেখে ৬শতক জমি ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে তার বড় ভাই ওই জমির উপর ১৪৪ধারার আরো একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দুটি আদালতে চলমান আছে। জমির উপর মামলা থাকার পরেও কিভাবে মোকলেছার জমি ক্রয় করলেন আর কোন ক্ষমতার বলেই বা মনোরঞ্জন জমি বিক্রয় করলেন আমার জানা নেই। যদিও তারা কাগজ-কলমে জমির মালিক নন। তার বাবার ক্রয়কৃত জমি অথচ মনোরঞ্জন জোর পূর্বক জবর দখল করে আছেন। কাগজপত্র না থাকার পরেও তিনি মোকলেছারের নিকট ২শতক জমি বিক্রি করেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ভাদাই আদর্শ বাজারের পাশে ১৪শতকের মধ্যে পাওয়া ৬শতক জমির উপর তিনি একটি দোকান ঘর তৈরী করে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবসা করে আসছেন। গত শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় প্রভাবশালী মোকলেছার রহমান ১৫/২০জন সন্ত্রাসী ভাড়া করে নিয়ে এসে বাজারে উপস্থিত সকলের সামনে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দোকান ঘরটি ভেঙ্গে দোকানের মালামালসহ তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। আমরা বাঁধা দিতে গেলে তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র উচিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে সেখান থেকে তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়। পরে প্রভাবশালী মোকলেছার ওই জায়গায় ঘর নির্মাণ করতে চাইলে তারা বিষয়টি থানায় অবগত করেন। পরে থানা পুলিশ আসলে তারা পালিয়ে যায়।
তিনি সাংবাদিকদের আরও জানান, গত আগস্ট মাসের ২০ তারিখে এই একই জমি ওই মোকলেছার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী দখল করতে গেলে আমার ভাতিজা চিত্তরঞ্জন রায় তাদের বাঁধা দেয়। এতে মোকলেছার ক্ষিপ্ত হইয়া তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্য ১। মানিক, ২। সুশীল এবং নাম না জানা অনেকেই চিত্তকে হত্যা করার আদেশ দেন। আদেশ পেয়ে ওই সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ১। মানিক, চিওরঞ্জন মাথায় কোপ মারে। এতে চিত্তরঞ্জন সাথে সাথে  মাটিতে লুটিয়ে পরে। পরে চিত্তর ছোট ভাই ও বৌ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসী ২। সুশীল,  তাদেরকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে আহত করে। মৃত্যু নিশ্চিত জেনে মোকলেছার তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে স্থান ত্যাগ করে চলে যায়।
পরে স্থানীয় লোকজন মাটিতে পড়ে থাকা আহত চিত্তরঞ্জন ও তার ভাই কার্ত্তিক রায় ও বৌদি বিথী রাণীকে উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সেখানে চিত্তরঞ্জনের মাথায় ৮টি ও ভাই কার্ত্তিকের হাতে ৩টি সেলাই হওয়ার পরে মৃত্যুর দুয়ার থেকে তারা ফেরত আসে। এ ঘটনায় আদালতে একটি মামলা দায়ের করলে অজ্ঞাত কারনে থানা পুলিশ এখন পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার বা আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন নাই। এ কারনেই ক্ষমতাধর মোকলেছার পুনঃরায় ওই জমি দখল করার জন্য তার দোকান ঘর ভেঙ্গে নিয়ে জমি দখলের চেষ্টা চালায়। এজন্য তাদের ধর্মীয় কিছু লোক ওই মোকলেছারকে সহযগিতা করছেন বলেও তিনি অভিযোগ উল্লেখ করেছেন।
অভিযোগকারী সাংবাদিকদের আরও বলেন, তার বাপ-দাদার ক্রয়কৃত ১৪শতক জমি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় রাধাকান্ত, মনোরঞ্জন, মানিক এবং সুশীল ভোগ করে আসছিল। পরে আমরা আদালতের দারস্ত হলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের আপোষ মিমাংসায় ৬শতক জমি প্রদান করা হয়।  পরে আমরা মহামান্য কোর্ট এ একটি মামলা করি। মামলাটি আদালতে চলমান থাকায় তারা ওই ৬শতক জমির উপর দোকান ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছেন। কিন্তু মোকলেছার এর কাছে পুনঃরায় আসামী সুশীল এবং মানিক আমাদের দখল করা ৬শতক জমি মামলা চলমান অবস্থায় বিক্রি করেন। ওই জমিটি মোকলেছার ক্রয়কৃত জমি বলে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বার বার দখল করার জন্য উঠে পরে লেগে পড়েছে। অথচ আদালতে কোন জমির উপর মামলা থাকলে সেই জমি ক্রয় বিক্রয় হতে পারে না। অথচ তিনি বলছেন তার ক্রয়কৃত জমি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ওই মোকলেছার একজন প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর লোক। তিনি এক সময় জামাতের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। পরে বিএনপিতে যোগদেন। এখনও তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে এই এলাকার কেউ কিছু বলতে পারে না। তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই তার জীবনে চলে আসে অত্যাচার, নীপিড়ন।
তিনি আরও বলেন, সংখ্যালঘু পরিবারটি যে রাস্তা দিয়ে মন্দিরে যাতায়াত করতো সেই রাস্তাটিও বন্ধ করে দিয়েছে ওই মোকলেছার। বর্তমানে ওই পরিবারটি অন্যের ফসলি জমির উপর দিয়ে যাতায়াত করছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোকলেছার রহমান সাংবাদিকদের জানান, জমির উপর মামলা থাক আর না থাক আমার যায় আসেনা, আমি টাকা দিয়ে জমি কিনেছি এ জন্য জমি আমার। জমির উপর মামলা থাকার পর কোন জমি ক্রয় বা বিক্রয় হয় না, তাহলে আপনি জমির দলিল করলেন কিভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রেজিস্ট্রারি অফিসে যান তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করেন তারা কেমন করে দলিল করেছেন।
আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোক্তারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, এ ব্যাপারে তিনি একটি অভিযোগ পেয়েছেন। ঘটনাস্থলে আমার অফিসার গিয়েছিলেন এবং জমির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে ওই জমিতে নামতে নিষেধ করেছেন। আগামী ১০ অক্টোবর উভয় পক্ষের জমির কাগজপত্র দেখে বিষয়টি ফয়সালা করে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone