মোঃ মাসুদ রানা রাশেদ ও হেলাল হোসেন কবির: সরকারি ওষুধসহ লালমনিরহাটের টাউন ফার্মেসীর মালিক মোঃ শরাফত হোসেন (৪০) নামে আবারও এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ। গ্রেফতার শরাফত হোসেন লালমনিরহাট জেলার পৌরসসভা এলাকার ওয়ারলেস কলোনীর মৃত শমসের আলীর ছেলে। আজ বৃহস্পতিবার ২৫ জুন বিকাল সাড়ে ৩টায় জেলা শহরের পুরান বাজার এলাকার ওই দোকান থেকে সরকারি ওষুধসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে গত মঙ্গলবার ২৩ জুন জেলা শহরের ড্রাইভার পাড়া এলাকায় রেলওয়ের একটি ভাড়া বাসা থেকে ২৬প্রকারের বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধ ও ১শত ৭৫টি ‘ডিজিটাল বডি ইলেক্ট্রনিক স্কেল’ মেশিন উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে জেলার ৩টি সরকারি হাসপাতালের ৩জন স্টোর কিপারসহ ৬জনকে আসামি করে মামলা রুজু করে।
ওই মামলায় কারাগারে আটক আছেন শহরের ড্রাইভার পাড়া কলোনির বাসিন্দা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রেজা মিয়া (৪৫) ও তার স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিন (৩৮)। আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রেজা মিয়া গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধুমাইটারী এলাকার মমতাজ উদ্দিনের ছেলে ও নিলুফা ইয়াসমিন লালমনিরহাট সদর উপজেলার খোচাবাড়ী এলাকার হাবিবুর রহমানের মেয়ে ।
মামলার অপর আসামীরা হলেন- হামিদুর রহমান দুলু, সিভিল সার্জন অফিসের ষ্টোর কিপার মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে মুরাদ, কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের ষ্টোর কিপার জাকারিয়া ও আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের ষ্টোর কিপার মাহবুব আলম।
লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ এরশাদুল আলম বলেন, গত মঙ্গলবার ২৩ জুন আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রাজা মিয়ার ভাড়া বাসা থেকে মোট ৬লক্ষ ৩৯হাজার ৪০৫টাকার ওষুধ জব্দ করা হয়েছে। এরমধ্যে ১৭৫টি ডিজিটাল বডি ইলেকট্রনিক স্কেল মেশিনের মুল্য ধরা হয়েছে ২লক্ষ ৬২হাজার টাকা। যার
প্রতিটির দাম ১৫০০টাকা করে। এছাড়া ২৫প্রকার ওষুধের মুল্য ধরা হয়েছে ৩লক্ষ ৭৭হাজার ৪০৬টাকা।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার ২৫ জুন বিকালে টাউন ফার্মেসীতে সদর ওসির নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে ৬প্রকার সরকারি ওষুধসহ শরাফত হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহফুজ আলম বলেন, প্রথম গ্রেফতার ওষুধ ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রেজা মিয়ার স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের সামনে ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করা হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লালমনিরহাট শহরের টাউন ফার্মেসীর মালিক শরাফত হোসেনকে সরকারি ওষুধসহ তার দোকান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অপর আসামিদের গ্রেফতারের জন্য লালমনিরহাট সিভিল সার্জনের অনুমতির জন্য লিখিত চিঠি পাঠানো হয়েছে । অনুমতি পেলে ওই তিন সরকারি কর্মচারীকেও গ্রেফতার করা হবে।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডাঃ নির্মলেন্দু রায় বলেন, সরকারি ওষুধ উদ্ধার ও পুলিশের মামলার ঘটনায় লালমনিরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ দীপংকর রায়কে প্রধান করে ২৫ জুন তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী দশ কর্মদিবসে সিভিল সার্জন বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে এবং আস্থার সংকট তাদেরকে দিয়ে সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া কী সম্ভব জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।